
আশ্রয়ব্যবস্থা সংস্কারের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাজ্য। তার আওতায় দেশটিতে শরণার্থীদের জন্য বিদ্যমান সুরক্ষা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা হবে বলে গতকাল শনিবার জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকার।
যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে ব্যাপক চাপের মধ্যে আছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বিশেষ করে দেশটিতে কট্টর দক্ষিণপন্থীদের প্রতি সমর্থন দ্রুত বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয়ব্যবস্থা সংস্কারের পরিকল্পনার ঘোষণা এল।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের গোল্ডেন টিকিট ব্যবস্থা বাতিল করব।’
যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে ব্যাপক চাপের মধ্যে আছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বিশেষ করে দেশটিতে কট্টর দক্ষিণপন্থীদের প্রতি সমর্থন দ্রুত বাড়ছে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে যাঁরা শরণার্থীর মর্যাদা পান, তাঁরা দেশটিতে পাঁচ বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি পান। ওই সময়ের পর তাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারেন এবং শেষ পর্যন্ত দেশটির নাগরিকত্বও পেতে পারেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, নতুন সংস্কার পরিকল্পনায় তারা শরণার্থী মর্যাদার মেয়াদ ৩০ মাসে কমিয়ে আনবে।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, এ সুরক্ষাব্যবস্থা নিয়মিত পর্যালোচনা করা হবে এবং শরণার্থীদের জন্য তাঁদের দেশ নিরাপদ মনে হলে, দেশে ফিরতে বাধ্য করা হবে।
এ ছাড়া নতুন পরিকল্পনায় যাঁরা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পাবেন, তাঁদের স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করার আগে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে ৫ বছর পর স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করা যায়।
মন্ত্রণালয় তাদের এ প্রস্তাবকে ‘আধুনিক যুগের আশ্রয়নীতির সবচেয়ে বড় সংস্কার’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই অবৈধ অভিবাসন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে চাপে আছেন স্টারমার; বিশেষ করে ফ্রান্স থেকে ছোট ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অবৈধ অভিবাসীদের আটকানো নিয়ে। তাঁর পূর্বসূরি কনজারভেটিভ সরকারও একই সমস্যায় ছিল।
আমি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের ‘গোল্ডেন টিকিট’ ব্যবস্থা বাতিল করব।শাবানা মাহমুদ, যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এ বছর এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজারের বেশি শরণার্থী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের অনেকে নিজের দেশে চলমান লড়াই-সংঘাত থেকে বাঁচতে ঝুঁকিপূর্ণ এ পথ পেরিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবেশ করেছেন।
গত বছরের তুলনায় এবার অভিবাসী প্রবেশের সংখ্যা বেশি। তবে ২০২২ সালে রেকর্ডসংখ্যক শরণার্থী যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে যাঁরা শরণার্থীর মর্যাদা পান, তাঁরা দেশটিতে পাঁচ বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি পান। ওই সময়ের পর তাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারেন এবং শেষ পর্যন্ত দেশটির নাগরিকত্বও পেতে পারেন।
সরকারি তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য চলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। এ বছর জুন পর্যন্ত ৬ মাসে প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।