
স্টোনহেঞ্জ আজও গবেষকদের কাছে এক বিস্ময়ের নাম। কোন উদ্দেশ্যে বিশাল আকৃতির সব পাথর দিয়ে যুক্তরাজ্যের উইল্টশায়ারে এই বৃত্ত রচনা করা হয়েছিল, তা যুগ যুগ ধরে উদ্ধারের চেষ্টা করেছেন তাঁরা। এ থেকে নানা মতবাদও উঠে এসেছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি করা এক গবেষণায় জানা গেছে নতুন তথ্য।
গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রত্নতাত্ত্বিক মাইক পার্কার পিয়ারসন। দেশটির ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে প্রাক্–ইতিহাস বিষয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। তাঁর মতে, যুক্তরাজ্যের কৃষক সম্প্রদায়গুলোকে সংঘবদ্ধ করতেই গড়ে তোলা হতে পারে বহুপ্রাচীন এই নিদর্শন।
স্টোনহেঞ্জের নির্মাণকাজ শুরু হয় পাঁচ হাজার বছর আগে। এতে বেশ কয়েক ধরনের পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, স্টোনহেঞ্জের মাঝের পাথরটি ৭০০ কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত স্টকল্যান্ডের একেবারে উত্তরাঞ্চল থেকে আনা হয়েছিল। ‘সারসেন স্টোন’ নামে পরিচিত সবচেয়ে বড় পাথরগুলো আনা হয়েছিল ২০ কিলোমিটার দূর থেকে। আর ‘ব্লুস্টোন’ নামে পরিচিত পাথরগুলোর উৎপত্তি ওয়েলসে।
প্রত্নতাত্ত্বিক পিয়ারসন বলেন, স্টোনহেঞ্জ নির্মাণে ব্যবহার করা পাথরগুলোর উৎপত্তিস্থল ভিন্ন। হতে পারে ব্রিটেনের বিভিন্ন দ্বীপের কৃষক সম্প্রদায়গুলোকে সংঘবদ্ধ করতে এই কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল। স্টোনহেঞ্জে বেদির আকৃতির যে পাথর রয়েছে, সেটিও স্কটল্যান্ড থেকে আনা। পাথরটি হয়তো উপহার হিসেবে এত দূর পাঠানো হয়েছিল। অথবা সেটিকে রাজনৈতিক ঐক্যের একটি নিদর্শন হিসেবে মনে করা হতো।
এর আগে করা বিভিন্ন গবেষণায় স্টোনহেঞ্জ সম্পর্কে নানা ধারণার কথা উঠে এসেছে। অনেকেরই বিশ্বাস, ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠান পালনের জন্য স্থাপনাটি ব্যবহার করা হতো। অনেকে মনে করেন, এটি ছিল একটি সৌর ক্যালেন্ডার। অবার অনেকের মতে, স্টোনহেঞ্জ আসলে ছিল একটি আকাশ পর্যবেক্ষণকেন্দ্র। তবে পিয়ারসন বলেন, ধর্মীয় কোনো স্থাপনার মতো এটিকে রাজনৈতিক স্থাপনা হিসেবেও বিবেচনা করা উচিত হবে।