
২০২০ সালের জুলাই মাসে স্লোভেনিয়ার সাভা নদীর তীরে মেলানিয়া ট্রাম্পের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। ঠিক তার চার মাস পর হোয়াইট হাউস ছাড়তে হয় মেলানিয়াকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি হিসেবে আবার হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছেন মেলানিয়া। কিন্তু এবার তাঁর হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার চার মাসের মাথায় সাভা নদীর তীর থেকে উধাও হয়ে গেছে ব্রোঞ্জের তৈরি তাঁর বিশাল মূর্তিটি। স্লোভেনিয়ায় মেলানিয়ার শহর সেভনিকায় ওই মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছিল।
এখন ব্রোঞ্জের তৈরি মূর্তিটির যা কিছু পাড়ে আছে, তা শুধু গোড়ালি থেকে কেটে নেওয়া দুটি পা এবং দুই মিটার উঁচু যে গাছের গুঁড়ির ওপর সেটি দাঁড়িয়ে ছিল, সেটুকু।
সেভনিকা থেকে মেলানিয়া ট্রাম্পকে ঘিরে কোনো স্মৃতিচিহ্ন এভাবে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়।
সেখানে মেলানিয়ার প্রথম মূর্তিটি উন্মোচন করা হয়েছিল ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। সেটি তৈরি করেছিলেন স্থানীয় শিল্পী আলেশ ‘ম্যাক্সি’ জুপেভচ। কাঠ দিয়ে তিনি ওই মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সেটি স্থাপনের এক বছর না যেতেই অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি সেটিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের দিন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
সৌভাগ্যবশত, মার্কিন শিল্পী ব্র্যাড ডাউনি আগেই মূর্তিটির একটি ঢালাই সংস্করণ তৈরি করে রেখেছিলেন। ব্র্যাড ডাউনিই ম্যাক্সিকে দিয়ে মেলানিয়ার কাঠের মূল মূর্তিটি তৈরি করিয়েছিলেন।
ডাউনি আগের মূর্তির মতো একটি মূর্তি তৈরি করেন, তবে এবার ব্রোঞ্জ দিয়ে।
নতুন মূর্তিটি উন্মোচনের সময় ডাউনি বলেছিলেন, নতুন সংস্করণটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন তা যতটা সম্ভব শক্তপোক্ত হয়। এ কারণে সেটি এমন একটি টেকসই উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যেন ইচ্ছেমতো সেটি নষ্ট করা না যায়।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, ডাউনির নতুন মূর্তিটিও নষ্ট করা সম্ভব। কারণ, সেটি গোড়ালি থেকে কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ বলেছে, তারা ‘মেলানিয়া’–এর উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে তদন্ত করছে এবং এটিকে সম্ভাব্য চুরির ঘটনা হিসেবে ধরে নিয়ে চোর খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
ব্র্যাড ডাউনি সব সময়ই দাবি করেছেন, তাঁর কাজটি ছিল রাজনৈতিক। তিনি এ কাজে সহশিল্পী হিসেবে ম্যাক্সিকে বেছে নেওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে বলেন, ম্যাক্সি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ফার্স্ট লেডির বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা অনেকটাই একরকম।
ডাউনির যুক্তি, মেলানিয়া ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ার একজন সুবিধাভোগী। অথচ এখন অন্য অভিবাসীরা তাঁর স্বামীর (ডোনাল্ড ট্রাম্প) ‘বিদেশীভীতি’ নীতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
মেলানিয়ার জন্ম স্লোভেনিয়ায়, তাঁর জন্মনাম মেলানিয়া ক্নাভসে।
মেলানিয়ার মূর্তি উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সেভনিকার স্থানীয় বাসিন্দারা। একদিকে তাঁরা কোনো সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানার সম্পত্তিতে সব ধরনের অনুপ্রবেশের নিন্দা করেছেন, অন্যদিকে তাঁরা এটাও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডির এই প্রতিচ্ছবি নিয়ে তাঁদের কারও গর্বিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।