
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বৃহস্পতিবার বলেছেন, ন্যাটো বা ইউরোপের দেশগুলোতে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। তবে পশ্চিমা দেশগুলো যদি ইউক্রেন যুদ্ধকে আরও বাড়িয়ে তোলে, তাহলে মস্কোকে জবাব দিতে হবে। প্রয়োজন হলে আগাম হামলাও চালাতে হবে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা তাস মেদভেদেভের পুরো বক্তব্য তুলে ধরে প্রতিবেদন করেছে। মেদভেদেভের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে নিজেদের টানাপোড়েন বেড়েছে বলে মনে করছে রাশিয়া। বিশেষ করে শান্তিচুক্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়ার মধ্য দিয়ে মস্কো এমন বার্তা পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ট্রাম্প উভয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ বিপজ্জনক আকার ধারণ করতে পারে বলে বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, এই যুদ্ধ আসলে বিশ্বের দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে একধরনের ছায়াযুদ্ধ।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ন্যাটো ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো একাধিককার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। কিন্তু মেদভেদেভ তা নাকচ করে দিয়েছেন। তবে পশ্চিমাদের যেকোনো ধরনের উসকানির ‘পূর্ণমাত্রায় জবাব’ দেওয়ার জন্য রাশিয়াকে প্রস্তুত থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মেদভেদেভ বলেন, ‘এই (হামলার) বিষয়ে পশ্চিমা রাজনীতিকদের বক্তব্য সম্পূর্ণ অর্থহীন।’ পশ্চিমা নেতারা ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মেদভেদেভকে উদ্ধৃত করে তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করতে হবে। পুরোমাত্রায় জবাব দিতে হবে। প্রয়োজনে আগাম হামলা চালাতে হবে।’
অনেক পশ্চিমা দেশের রক্তেই বিশ্বাসঘাতকতা মিশে আছে মন্তব্য করে রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, তাঁরা এখনো নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে পুরোনো ধ্যানধারণা পোষণ করেন।
মেদভেদেভের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। কিন্তু ইউরোপের ‘বিরোধপূর্ণ’ পরিবেশ নিয়ে তাঁর উদ্বেগকে যৌক্তিক বলেই মনে করে ক্রেমলিন।
পেসকভ বলেন, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই হুমকি বিশ্লেষণ করছেন। যেখানে ট্রাম্প ইউক্রেন নিয়ে ৫০ দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তি না করলে রাশিয়ার পণ্য আমদানিকারক সব দেশ ও পক্ষের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৮ থেকে ২০১২ সালে দায়িত্ব পালনের সময় নিজেকে একজন উদারপন্থী আধুনিকতাবাদী হিসেবে প্রচার করতেন মেদভেদেভ। বর্তমানে তিনি রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।