কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক ও নারী পাচারকারী জেফরি এপস্টেইন-সংক্রান্ত মামলার নথি নিয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং বিশ্বজুড়ে শোরাগোল পড়েছে। এসব নথিতে আরও অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর নাম উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, এপস্টেইনের ব্যক্তিগত দ্বীপে গিয়ে ‘অনেক কিশোরীর’ সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়েছেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু।
যুক্তরাজ্যের বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু। প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপ তাঁর মা-বাবা।
যুক্তরাষ্ট্রে আলোচিত জেফরি এপস্টেইনের যৌন কেলেঙ্কারি-সংক্রান্ত মামলায় সদ্য প্রকাশিত নথিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর নাম উঠে এসেছে। আরও উঠে এসেছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রয়াত পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসন, বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী ডেভিড কপারফিল্ডসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির নামও।
নিউইয়র্কের একজন বিচারকের নির্দেশে গত বুধবার থেকে আলোচিত এসব নথি প্রকাশ করা শুরু হয়েছে। যৌন অপরাধের মামলায় বিচারের অপেক্ষায় থাকা জেফরি এপস্টেইন ২০১৯ সালে আত্মহত্যা করেছেন।
এর আগে ২০১৫ সালে মামলাটি করেছিলেন ভার্জিনিয়া গুইফরি নামের এক নারী। ভার্জিনিয়ার অভিযোগ, একসময় আরও অনেক অল্পবয়সী নারীর সঙ্গে যৌন ব্যবসায় কাজে লাগানোর জন্য তাঁকেও পাচার করেছিলেন জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর প্রেমিকা জিসলেন ম্যাক্সওয়েল। ওই সময় তিনি কিশোরী ছিলেন বলে জানান ভার্জিনিয়া।
ভার্জিনিয়া আরও জানান, জেফরি এপস্টেইনের নির্দেশে বিভিন্ন সময় তাঁকে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে হয়েছিল। তাঁদেরই একজন ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রু।
নিউইয়র্কের অভিজাত এলাকা ম্যানহাটনে এপস্টেইনের একটি বাসায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিন আইল্যান্ডে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত দ্বীপে কিশোরী বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাঁকে নিপীড়ন করেছেন, এমনটাই অভিযোগ ভার্জিনিয়ার।
যদিও প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, ভার্জিনিয়া গুইফরির সঙ্গে কোনো ‘ভুল কাজ’ করেননি তিনি। এমনকি ভার্জিনিয়ার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্কও ছিল না।
নারী পাচার ও যৌন ব্যবসার অভিযোগে বিচার শুরুর আগে ২০১৯ সালে ম্যানহাটনের কারাগারে আত্মহত্যা করেন এপস্টেইন। তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল একই অপরাধে ২০ বছরের কারাভোগ করছেন।
অন্যদিকে ২০১৯ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। তাতে তিনি এপস্টেইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকার কথা স্বীকার করেন। এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অ্যান্ড্রুকে প্রত্যাহার করে নেন তৎকালীন ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।