
যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য ও রাজা তৃতীয় চার্লসের ভাই অ্যান্ড্রু তাঁর ‘প্রিন্স’ উপাধি হারিয়েছেন। তাঁকে ছাড়তে হবে উইন্ডসরে বরাদ্দ দেওয়া রাজকীয় বাসভবন ‘রয়েল লজ’ও।
যুক্তরাষ্ট্রে কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক হিসেবে দোষী সাব্যস্ত জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে নিজ দেশে তীব্র সমালোচনার মধ্যে আছেন অ্যান্ড্রু। আর এ অবস্থায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাজার ভাই এখন থেকে অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর নামে পরিচিত হবেন।
এর আগে এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ককে কেন্দ্র করে সমালোচনার মুখে চলতি মাসের শুরুতে ‘ডিউক অব ইয়র্ক’সহ রাজকীয় নানা পদবি ব্যবহার না করার ঘোষণা দেন অ্যান্ড্রু। বিশেষ করে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগকারী নারী ভার্জিনিয়া জিউফ্রের একটি স্মৃতিকথা প্রকাশের পর তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা আরও বেড়ে যায়।
জিউফ্রের মৃত্যুর পর চলতি মাসের শুরুর দিকে এ স্মৃতিকথা প্রকাশ করা হয়েছে। আত্মজীবনীতে জিউফ্রে অভিযোগ করেছেন, কিশোরী বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তাঁর কয়েকবার যৌন সম্পর্ক হয়েছে। তবে অ্যান্ড্রু বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
এর আগে এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ককে কেন্দ্র করে সমালোচনার মুখে চলতি মাসের শুরুতে ‘ডিউক অব ইয়র্ক’সহ রাজকীয় নানা পদবি ব্যবহার না করার ঘোষণা দেন অ্যান্ড্রু। বিশেষ করে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগকারী নারী ভার্জিনিয়া জিউফ্রের একটি স্মৃতিকথা প্রকাশের পর তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা আরও বেড়ে যায়।
জীবিত থাকাকালেও অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন জিউফ্রে। অ্যান্ড্রু ২০২২ সালে জিউফ্রের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে মামলাটি মীমাংসা করেছেন।
গতকাল বাকিংহাম প্যালেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজা আজ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সব ধরনের উপাধি, সম্মাননা ও রাজকীয় মর্যাদা আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
রাজপ্রাসাদ থেকে আরও বলা হয়, উপাধি বাতিল করা ছাড়াও অ্যান্ড্রুকে দেওয়া রয়েল লজ বাড়িটির ইজারা বাতিলের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নোটিশ ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে।
প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে এখন স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটের একটি ব্যক্তিগত বাসভবনে থাকতে হবে। জানা গেছে, রাজা চার্লসের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বহন করা হবে এর খরচ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘অ্যান্ড্রু নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করলেও এ শাস্তিগুলো অপরিহার্য বলে বিবেচিত হয়েছে।’
অ্যান্ড্রু ২০০৪ সাল থেকে রয়েল লজে বসবাস করছেন। এর আগের বছর তিনি রয়েল লজে থাকার বিষয়ে ক্রাউন এস্টেটের সঙ্গে ৭৫ বছরের একটি ইজারা চুক্তি সই করেন। ক্রাউন এস্টেট একটি স্বাধীন প্রপার্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়।
এ ছাড়া প্রাসাদের পক্ষ থেকে ‘সব ধরনের নির্যাতনের শিকারদের প্রতি’ সমর্থন ও সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে।
অ্যান্ড্রুর দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যাসন্তান প্রিন্সেস ইউজিনি ও প্রিন্সেস বিট্রিসের রাজকীয় উপাধি বহাল থাকবে। অ্যান্ড্রু নিজে এখনো ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকার তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছেন।
জানা গেছে, অ্যান্ড্রুর সাবেক স্ত্রী সারা ফার্গুসনও রয়েল লজ ছাড়বেন এবং ব্যক্তিগতভাবে থাকার ব্যবস্থা করবেন।
কিছুদিন আগেও সারা ‘ডাচেস অব ইয়র্ক’ উপাধি ব্যবহার করতেন। তবে অ্যান্ড্রু স্বেচ্ছায় ‘ডিউক অব ইয়র্ক’ উপাধি ত্যাগ করার পর তিনি নিজের পারিবারিক নাম ফার্গুসন ব্যবহার করতে শুরু করেন।
অ্যান্ড্রুর প্রিন্স উপাধি বাতিল করা বিষয়ে সরকারের সঙ্গেও পরামর্শ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারি কর্তৃপক্ষও প্রিন্স অ্যান্ড্রুর উপাধি বাতিলের সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে।
অ্যান্ড্রু ২০০৪ সাল থেকে রয়েল লজে বসবাস করছেন। এর আগের বছর তিনি রয়েল লজে থাকার বিষয়ে ক্রাউন এস্টেটের সঙ্গে ৭৫ বছরের একটি ইজারা চুক্তি সই করেন। ক্রাউন এস্টেট একটি স্বাধীন প্রপার্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়।
উইন্ডসর এস্টেটে অবস্থিত রয়েল লজ একটি গ্রেড টু তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক ভবন। সেখানে রয়েছে, ছয় বেডরুমের একটি কটেজ, একটি মালির কটেজ, একটি চ্যাপেল লজ ও নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার আলাদা ব্যবস্থা।
এপস্টেইনকে ২০০৮ সালে ফ্লোরিডায় ১৮ বছরের কম বয়সী একজনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যৌনপণ্য পাচার মামলায় বিচারাধীন থাকাকালে ২০১৯ সালে নিউইয়র্কের কারাগারে আত্মহত্যা করেন তিনি।