Thank you for trying Sticky AMP!!

অশান্ত জম্মু-কাশ্মীরে ভোট, মেহবুবা আবার ‘গৃহবন্দী’

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের জেলা উন্নয়ন পর্ষদের (ডিডিসি) নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন ভোটাররা। শনিবার বাদগাম জেলার শামসাবাদের একটি ভোটকেন্দ্রে

ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের জেলা উন্নয়ন পর্ষদের (ডিডিসি) প্রথম দফার ভোট হয়েছে শনিবার। কিন্তু এই ভোটের আগে শ্রীনগরে তিন দিন ধরে ‘গৃহবন্দী’ করে রাখা হয়েছে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিকে।

রাজ্য দ্বিখণ্ডীকরণ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠা ও সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর অশান্ত জম্মু-কাশ্মীরে এই প্রথম নির্বাচন। ভোট হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীর ডিভিশনের মোট ২০টি জেলার ২৮০ কেন্দ্রে। শনিবার ছিল প্রথম দফার ভোট। আট পর্যায়ের এই ভোট শেষ হবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর। গণনা ২২ ডিসেম্বর।

এই ভোটে নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল জোরদার। বিকেল পর্যন্ত কোনো জায়গা থেকে হিংসাত্মক কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বেলা একটা পর্যন্ত ভোটের যে হিসাব প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বিপুল উৎসাহ নিয়ে জনতা ভোট দিয়েছেন। প্রবল ঠান্ডা সত্ত্বেও স্থানীয় সময় বেলা একটার মধ্যে গড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে। শতাংশের এই হার ৬০ পেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

কাশ্মীর উপত্যকার জেলাগুলোর তুলনায় জম্মু ডিভিশনের জেলাগুলোয় ভোট পড়ার হার বেশি। এর একটা কারণ যদি হয় নিরাপত্তাজনিত আশঙ্কা কম হওয়া, অন্য কারণ তাহলে জম্মু অঞ্চলের বেশি জনঘনত্ব। জম্মুর অধিকাংশ জেলায় ভোট পড়েছে গড়ে ৫০ শতাংশের বেশি। তুলনায় কাশ্মীর উপত্যকার সন্ত্রাসকবলিত জেলাগুলোয় ভোটের হার ৩০ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। বেলা একটা পর্যন্ত সব থেকে কম ভোট পড়ে উপত্যকার পুলওয়ামায়। মাত্র ৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়ে জম্মুর সাম্বায়। ৫৯ শতাংশ।

ভোট দেওয়ার আগে একজন ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালি লাগিয়ে দিচ্ছেন একজন নির্বাচন কর্মকর্তা। শনিবার বাদগাম জেলার শামসাবাদের একটি ভোটকেন্দ্রে

ডিডিসির ভোটে লড়াই প্রধানত বিজেপি ও সরকারি মদদে গঠিত ও সমর্থিত নতুন রাজনৈতিক দল জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টির সঙ্গে সপ্তদলীয় বিরোধী জোট পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশনের (পিএজিডি)। সব আসনে এই বিরোধী জোট লড়ছে। কিছু আসনে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হয়েছে তাদের। পিএজিডির ভোটে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত শাসক দলকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুলেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সেই কারণে বিরোধী নেতাদের নির্বাচনে প্রচার করতে নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

এই অভিযোগের সর্বশেষ সংযোজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির দাবি। শ্রীনগরে তিন দিন ধরে তিনি ‘গৃহবন্দী’। নতুন এই বন্দিদশার অভিযোগ জানানোর পর গত শুক্রবার তিনি নিজের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন ডাকলেও নিরাপত্তারক্ষীরা কোনো সাংবাদিককে তাঁর বাসভবনে যেতে দেননি। মেহবুবার অভিযোগ, তাঁর মেয়ে ইলতিজাকেও বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। পিডিপির যুবনেতা ও পুলওয়ামায় জোট প্রার্থী ওয়াহিদ পারাকে তিন দিন আগে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। মেহবুবার অভিযোগ, বিরোধীদের প্রচারে বাধা সৃষ্টি করে এটা নির্বাচনে জেতার সরকারি ছক। মেহবুবা ধৃত যুবনেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে পুলওয়ামায় যেতে দেননি। এই জেলাতেই ভোট পড়েছে সবচেয়ে কম।

রাজ্য দ্বিখণ্ডীকরণ ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, তিনটি পরিবারের কবল থেকে জম্মু-কাশ্মীরকে মুক্ত করাই তাঁর লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দল বিজেপি সফল হয় কি না, এই ভোট তা প্রমাণ করবে।