Thank you for trying Sticky AMP!!

কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে পশ্চিমবঙ্গের বাম-কংগ্রেস জোট ও ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) সমন্বয়ে গড়া সংযুক্ত মোর্চার বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়

মোদি-মমতাকে হটানোর আহ্বান ব্রিগেডের বিশাল সমাবেশে

কলকাতার ঐতিহাসিক ব্রিগেড ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ব্রিগেড সমাবেশ। পশ্চিমবঙ্গের বাম-কংগ্রেস জোট ও ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) যৌথভাবে সংযুক্ত মোর্চা বা ইউনাইটেড অ্যালায়েন্স জোট গঠন করেছে। তাদের ডাকেই আজ লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় আজকের ব্রিগেড সমাবেশ।

সমাবেশ থেকে মমতার বিদায়ঘণ্টা বাজানোর ডাক ওঠে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, মমতা আর ক্ষমতা পাবেন না। দিন আসছে সংযুক্ত মোর্চার। তারাই এ রাজ্যে বিকল্প সরকার দেবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। তৃণমূলের শোষণ আর অত্যাচার বন্ধ করবে। সমুন্নত রাখবে এ বাংলার ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে।

বাম ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বিশাল সমাবেশে কংগ্রেস, বাম দল এবং আইএসএফের নেতারা ভাষণ দেন। সবার বক্তব্যেই মোদি-মমতার ‘অপশাসনের’ কথা উঠে আসে।

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূলকে হঠাতে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ নেতাদের ঐক্য

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘এবার চাই বিকল্প ধর্মনিরপেক্ষ সরকার। জনতার সরকার। শোষণহীন সরকার।’ স্বাগত ভাষণে বাম ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘আমরাই এ বাংলায় বিকল্প, আমরাই ধর্মনিরপেক্ষ, আমরাই ভবিষ্যৎ। এ বাংলায় সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথা তুলতে দেব না আমরা। এ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জারি থাকবে। কারণ, এ রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনেছে মোদি-মমতা। এবার সেই বীজকে অঙ্কুরেই আমাদের বিনষ্ট করতে হবে।’

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘সামাজিক বৈষম্য দূর করতে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতার লড়াই জারি রাখতে হবে। লড়াই করতে হবে এ বাংলায় শিল্প স্থাপনের, বেকার সমস্যা দূর করার, নারী কল্যাণের জন্য। কারণ, তৃণমূল দলটাই এখন বিজেপি হয়ে গেছে।’

সমাবেশে আরএসপি নেতা মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, এখন কেন্দ্রে ও রাজ্যে রয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকার। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করাই এ সরকারের কাজ। এ সরকার নাগপুরের ইশারায় চলে। তাই হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান প্রাণ চলবে না। এ সরকার আজ বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সমাবেশে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ও নবগঠিত ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের প্রধান এবং সংযুক্ত মোর্চার শরিক আব্বাস সিদ্দিকী বক্তব্য দেন

কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘এই রাজ্যে আগামী দিনে তৃণমূল ও বিজেপি থাকবে না। থাকবে সংযুক্ত মোর্চা। আমাদের লড়াই থাকবে এই তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে। লক্ষ্য থাকবে রাজ্যপাট থেকে তৃণমূলকে বিদায় করে দেওয়া। তাই এই রাজ্যে শিগগিরই পরাজয় হবে তৃণমূল–বিজেপির অপশক্তির। এই রাজ্যে পরিবর্তনের নতুন রামধেনু আজ উঠেছে। মমতা এবার দেখে যান, এই ব্রিগেডে সংযুক্ত মোর্চার ক্ষমতা। মোদি আর দিদি আজ এক হয়ে গেছে। তাই এঁদের পরাস্ত করার দিন এসে গেছে। এবার নির্বাচনে এই বাংলার মানুষ মমতাকে যোগ্য জবাব দেবে।’

সমাবেশে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ও নবগঠিত ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের প্রধান ও সংযুক্ত মোর্চার শরিক আব্বাস সিদ্দিকী বলেন, ‘এবার এ বাংলা থেকে মমতাকে উৎখাত করে ছাড়ব। বিজেপির বি-টিম এই মমতা। তাদের বাংলা থেকে তাড়াতেই হবে। এই বাংলা নেতাজি, নজরুল, রবীন্দ্রনাথের। এখানে সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। তাই আমরা মমতাকে এবার জিরো করে ছাড়ব। আমরা এই রাজ্যে ভিক্ষা চাই না। চাই অধিকার। আজ আর ভয় পাওয়ার কারণ নেই।’

ব্রিগেডের সমাবেশের মঞ্চে নেতারা

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম বলেন, উন্নয়নের নামে মমতা আদিবাসীদের প্রতারণা করছেন। অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে।