ভারতের রাজনীতি

এনসিপিতে চাচা–ভাতিজার লড়াই

শারদ পাওয়ার ও অজিত পাওয়ার
শারদ পাওয়ার ও অজিত পাওয়ার

ভারতের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) ভাঙনের পর দলের নাম ও প্রতীক কার হাতে থাকবে, আপাতত তা নিয়ে লড়াই চলছে শারদ পাওয়ার ও তাঁর ভাতিজা অজিত পাওয়ারের মধ্যে। গতকাল বুধবার সেই লড়াই তীব্রতর করে অজিত পাওয়ার দলের সভাপতি পদ থেকে শারদকে সরিয়ে দিলেন। গতকাল নির্বাচন কমিশনকে সে কথা জানিয়ে দাবি করা হয়েছে, গত ৩০ জুন দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে অজিত পাওয়ার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

গতকাল দুই পক্ষই দলীয় বিধায়কদের বৈঠক ডেকেছিল। অজিত পাওয়ারের ডাকা বৈঠকে ২৯ জনের উপস্থিতি লক্ষ করা গেলেও শারদ পাওয়ারের মঞ্চে ১৭ জনের বেশি বিধায়ক দেখা যায়নি। এনসিপির মোট বিধায়কের সংখ্যা ৫৩। দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতে গেলে অজিত পাওয়ারের প্রয়োজন ৩৬ জনের সমর্থন।

অজিত গোষ্ঠী নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের নাম ও প্রতীক দাবি করে আবেদন জানিয়ে বলেছে, গোটা দলই তাদের সঙ্গে। একই সঙ্গে শারদ গোষ্ঠীও কমিশনকে জানিয়েছে, দলের প্রতীক নিয়ে যেন একতরফা সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়। মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকারকেও শারদ জানিয়েছেন, অজিত পাওয়ারসহ যে ৯ বিধায়ক মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন, দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুযায়ী তাঁদের সদস্যপদ বাতিল করা হোক। গতকাল সভায় অনুগামীদের তিনি বলেন, দলের নাম ও প্রতীক অন্য কারও হাতে যাবে না। এই দল তিনি গড়ে তুলেছিলেন। তাঁরই থাকবে।

শারদ পাওয়ার অনুগামীদের বলেন, ‘কোন দিকে কতজন বিধায়ক, এসব গুরুত্বহীন। একটা সময় আমার সঙ্গে ৬৮ জন বিধায়ক ছিলেন। ৬২ জন আমাদের ছেড়ে চলে যান। আমি বাকি ৬ জনকে নিয়ে লড়েছিলাম। ভোটে ওই ৬২ জনের মধ্যে জিতেছিলেন মাত্র ৪ জন। আমরা জিতেছিলাম সব নতুন মুখ নিয়ে।’

অজিতের বয়স ৬৩। চাচা শারদ পাওয়ারের ছত্রচ্ছায়ায় রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি। বেড়ে ওঠাও। মহারাষ্ট্র সরকারে তিন–তিনবার তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু স্বপ্ন যে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার, গতকালের সমাবেশে তা তিনি স্পষ্ট করে দেন। বিধায়ক সমাবেশে বলেন, ‘একদিন ঠিক মুখ্যমন্ত্রী হব। সেই আশা আমার আছে।’ কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে কাকা শারদ পাওয়ারই যে বাধা, তা জানাতেও দ্বিধা করেননি। শারদের উদ্দেশে অজিত বলেন, ‘সবাইকেই একটা সময় থামতে হয়। আপনার বয়স ৮৩। আপনি এবার বিশ্রাম নিন। আমাদের সুযোগ দিন। ভুলভ্রান্তি করলে শুধরে দিন।’

এনসিপি দল শারদ না অজিত—কার হাতে থাকে, তা নির্বাচন কমিশনের বিচার্য। কিন্তু সরকারে এনসিপি নেতাদের যোগদান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ও তাঁর অনুগামীদের চিন্তায় ফেলেছে। শিন্ডে সেনায় শুরু হয়েছে তীব্র অসন্তোষ। তাঁরা শঙ্কিত, এনসিপির যোগদানের ফলে সরকারে তাঁদের গুরুত্ব কমবে। বেশি মন্ত্রিত্বও জুটবে না।