তীব্র গরম থেকে বাঁচতে কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে হাঁটছে মানুষ। ১০ জুন, পুরোনো দিল্লি
তীব্র গরম থেকে বাঁচতে কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে হাঁটছে মানুষ। ১০ জুন, পুরোনো দিল্লি

দিল্লিসহ উত্তর ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহ, ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি

দিল্লি জ্বলছে। সেই সঙ্গে জ্বলছে গোটা উত্তর ভারত। স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রার সঙ্গে জুড়েছে অসহনীয় আর্দ্রতা। জ্যৈষ্ঠের শেষের এই তাপ বৃদ্ধির দরুন দিল্লিতে জারি করা হয়েছে ‘রেড অ্যালার্ট’। তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত, সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়াবিদেরা বলেছেন, আরও কয়েকটা দিন এই অসহনীয় পরিস্থিতি চলবে। তারপর দেখা দিতে পারে পশ্চিমি ঝড়। বলা হয়েছে, উত্তর–পশ্চিম ভারতে এখনো মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করেনি। ফলে আগামী দিনের হাল আরও খারাপ হতে পারে।

গত মঙ্গলবার দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার তাপমান ৪৪ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই ছিল। গতকাল বুধবার তা ৪৫ ডিগ্রি পেরিয়ে যায়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, স্বাভাবিকের তুলনায় এই তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রি বেশি। রাজধানীর অভিজাত লুটেন্স দিল্লির আয়ানগরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি। সেই সঙ্গে আর্দ্রতা বৃদ্ধির দরুন তাপমাত্রা অনুভূত হয় ৫১ ডিগ্রির মতো। এই প্রবল তাপপ্রবাহের সঙ্গে জায়গায় জায়গায় যুক্ত হয় বিদ্যুৎ বিপর্যয়।

আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী নরেশ কুমার পিটিআইকে জানান, আগামী শনিবার নাগাদ পশ্চিমি ঝঞ্ঝার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। কিছুটা ঝড়বৃষ্টি সামান্য স্বস্তি দিতে পারে।

দিল্লিতে তাপপ্রবাহ হয় উত্তর ভারতের কারণে। জম্মু–কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম–উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানে তাপপ্রবাহ হলে তার প্রভাব পড়ে দিল্লিতে। যেমন রাজস্থানে মরুঝড় হলে দিল্লিতে আঁধি হয়। পশ্চিম রাজস্থানের গঙ্গানগরে তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রির ওপরে ঘোরাফেরা করছে। পাঞ্জাবের লুধিয়ানাতে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। গোটা রাজস্থানেই জারি রয়েছে কমলা সতর্কতা।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৫ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত আবহাওয়া এমনই থাকবে। বিচ্ছিন্নভাবে কোনো কোনো জায়গায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে আবহাওয়ার সার্বিক উন্নতি হবে উত্তর–পশ্চিমি মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করলে।

পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল প্রদেশও তাপপ্রবাহ থেকে মুক্ত নয়। ওই রাজ্যের উনায় গতকাল তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রির ওপরে ছিল। শিমলা ও মানালির মতো পর্যটনকেন্দ্রেও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। রাজ্যের কোনো কোনো এলাকায় জলকষ্টের খবর পাওয়া গেছে।

তাপপ্রবাহের পাশাপাশি দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে সতর্কতা জারি হয়েছে করোনাভাইরাস নিয়েও। হঠাৎই এই ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির দরুন কোভিড নিয়ে বেশ কিছু কর্তব্যের কথা জনসাধারণকে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎপ্রার্থীদের জন্য গতকাল থেকে কোভিড পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।