
ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে ‘সঞ্চার সাথি’ অ্যাপ নিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। ভারতের স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সব প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদনের সময় মুঠোফোনে সরকারি সাইবার নিরাপত্তা অ্যাপ ‘সঞ্চার সাথি’ ইনস্টল করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তীব্র সমালোচনার মুখে আজ বুধবার ভারতের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চার সাথির ব্যবহার ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত হলো মুঠোফোন প্রস্তুতকারকদের জন্য এই অ্যাপ ইনস্টল করা বাধ্যতামূলক করা হবে না।’
ভারতের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) প্রাথমিক এক নির্দেশনায় স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক ও আমদানিকারকদের নতুন ফোনে ‘সঞ্চার সাথি’ অ্যাপ ইনস্টলের পাশাপাশি সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে পুরোনো ফোনগুলোতেও অ্যাপটি যুক্ত করতে বলা হয়েছিল। নির্দেশটি গত সোমবার প্রকাশ্যে আসে। নির্দেশে আরও উল্লেখ ছিল, অ্যাপটির কোনো কার্যকারিতা নিষ্ক্রিয় বা সীমাবদ্ধ করা যাবে না।
‘সঞ্চার সাথি’ ভারত সরকারের তৈরি একটি সাইবার নিরাপত্তা অ্যাপ, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা প্রতারণামূলক কল, বার্তা এবং চুরি হওয়া মুঠোফোনের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন।
আজ বুধবার সকালে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া পার্লামেন্টে বলেন, ‘...সংগৃহীত প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে সরকারি নির্দেশে পরিবর্তন আনতে হলে আমরা তা করব।’ নজরদারি–সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গোপনে নজরদারি করা সম্ভব নয়। আর তা করাও হবে না।’
এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছিল, স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক অ্যাপল ও গুগল ভারত সরকারের নির্দেশনার বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রযুক্তি কোম্পানি দুটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি অপারেটিং সিস্টেম আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডের মালিক। গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগ তাদের মাথাব্যথার বড় কারণ ছিল।
কোম্পানিগুলোর অবস্থান সম্পর্কে অবগত কিছু সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলছে, মুঠোফোন প্রস্তুতকারকদের বিশ্বের কোথাও রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো অ্যাপ নিজেদের ডিভাইসে আগেভাগে ইনস্টল করার নজির নেই। এটা করতে গেলে কোম্পানিগুলোকে ভারতে ব্যবহারের জন্য আলাদাভাবে আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড কাস্টমাইজ করতে হতে পারে, যা তাদের কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি করবে।