মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য দেন
মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য দেন

কাশ্মীরে অভিযানে গিয়ে নিহত সেনা ঝন্টু আলী শেখের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি দিলেন মমতা

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় সন্দেহভাজনদের ধরতে চলমান অভিযানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত পশ্চিমবঙ্গের সেনাসদস্য ঝন্টু আলী শেখের স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নিহত সেনাসদস্যের পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর স্ত্রীকে পশ্চিমবঙ্গ হোমগার্ডে চাকরি এবং ১০ লাখ রুপি আর্থিক অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ঝন্টুর বয়স ছিল ৩৬ বছর। তিনি ১০ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। মার্চ মাসে সর্বশেষ নিজের বাড়িতে ঘুরে গেছেন ঝন্টু শেখ। ঝন্টুর পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, মা–বাবা এবং দুই ভাই রয়েছেন। বড় ভাই রফিকুল শেখ কাশ্মীরের অন্য একটি এলাকায় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তাঁরা সবাই গভীরভাবে শোকগ্রস্ত। রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে যেন তাঁরা বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল ২৬ পর্যটককে হত্যার পর হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করার জন্য ভারতের সেনাবাহিনী এবং জন্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ যৌথ অভিযান শুরু করে। এই অভিযান চলছিল উধমপুরে। সেখানে তল্লাশির সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ও পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার তেহট্টের পাথরঘাটার বাসিন্দা ঝন্টু আলী শেখ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন মুর্শিদাবাদের দাঙ্গায় বিধ্বস্ত সুতির মাঠে যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আর কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সহ্য করা হবে না।’ এদিন সুতি, ধুলিয়া ও ফারাক্কা নিয়ে নতুন একটি মহকুমা গঠনের ঘোষণাও দেন তিনি।

কোনো দাঙ্গা চাই না—ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ধর্মের অর্থ মানবিকতা, এ বন্ধনকে আমরা কখনো ভাঙতে দেব না।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘কেউ উসকানি দিক, কেউ ভর্ৎসনা করুক, দাঙ্গার ডাকে সাড়া দেবেন না মা-বোনেরা। বিজেপির কথায় প্রলুব্ধ হলে চলবে না। আমি একটুও দাঙ্গা দেখতে চাই না। মা-বোনেরাই দাঙ্গা রুখবেন। আমি সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করি এবং ধর্মের নামে কোনো ক্ষতি আমি মেনে নেব না। শান্তিই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য, আমাদের সম্প্রীতির বন্ধনই শক্তভাবে রক্ষা করতে হবে।’

মুর্শিদাবাদে অতীতে দাঙ্গায় প্রাণহানির অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি অগ্নিসংযোগের আগুনে অগণিত জীবন ঝলসে গেছে। সেখান থেকে মূল্যবান শিক্ষা হলো—মৌলবাদী উসকানিতে ফিরবেন না। দাঙ্গা করলে আমি আপনাদের পাশে থাকব না।’