Thank you for trying Sticky AMP!!

রচনা ব্যানার্জি, ইউসুফ পাঠানসহ একঝাঁক তারকাকে প্রার্থী করল তৃণমূল

ভারতের ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান, অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি, অভিনেতা দেব, অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জনগর্জন’ সভা থেকে ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন। কলকাতার ঐতিহাসিক ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে এ সমাবেশ হয়। মমতার উৎসাহ ও সমর্থনে গড়া বিজেপিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া জোট’ অস্তিত্বে থাকলেও মমতা সেই জোটকে উপেক্ষা করেই ঘোষণা করেছেন প্রার্থী তালিকা। মমতা বলেই দিয়েছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস একাই লড়বে।

তৃণমূল বাদে এই রাজ্যে গত সপ্তাহে ২০ জনের তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি।
মমতার ঘনিষ্ঠ দুই চলচ্চিত্র তারকা মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান মনোনয়ন পাননি। তবে মমতা চমক দিয়েছেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’–এর উপস্থাপিকা অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জিকে মনোনয়ন দিয়ে।

রচনা এই প্রথম মনোনয়ন পেলেন। চলচ্চিত্র অঙ্গনের তারকা দেব, জুন মালিয়া, শতাব্দী রায়, সায়নী ঘোষ, শত্রুঘ্ন সিনহাসহ ক্রীড়াঙ্গনের তারকা কীর্তি আজাদ ও ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এবার। মমতার লক্ষ্য এসব তারকা প্রার্থী দিয়ে বিজেপিকে ঘায়েল করা। যদিও বিজেপি এবারও পুরোনো দুই তারকা প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাঁরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য লকেট চট্টোপাধ্যায় ও বর্তমান বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়।

বিরোধীরা বলছে, তৃণমূলের অবস্থা ভালো না থাকায় মমতা মনে করেছেন, তারকা প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে বিজেপিকে ঘায়েল করা সহজ হবে। ফলে তৃণমূলের এই তারকা প্রার্থীরা কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন।

বহরমপুর সব সময় কংগ্রেসের ঘাঁটি ছিল এবং এখনো রয়েছে। এই আসনের এমপি কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরী। বহরমপুর ‘অধীর গড়’ হিসেবে পরিচিত। তাঁকে হারাতে তৃণমূল এই সংখ্যালঘু–অধ্যুষিত আসনে প্রার্থী করেছে প্রখ্যাত ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে। ফলে এখানে লড়াই জোরদার হবে।

হুগলিতে অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জিকে প্রার্থী করেছে বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যাদবপুরে প্রার্থী করা হয়েছে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে। কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী করেছে মহুয়া মৈত্রকে। আবার মালদহ উত্তরে প্রার্থী করেছে সদ্য পদত্যাগী পুলিশ কর্মকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বর্ধমানের দুর্গাপুর আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে সাবেক ক্রিকেট তারকা কীর্তি আজাদকে।

আসানসোলে প্রার্থী করা হয়েছে বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহাকে। বীরভূমে প্রার্থী করেছেন অভিনেত্রী শতাব্দী রায়কে। নায়ক দেবকে প্রার্থী করা হয়েছে ঘাটালে বিজেপির তারকা প্রার্থী হিরণের বিরুদ্ধে। হিরণ চট্টোপাধ্যায় বর্তমান বিধানসভার সদস্য। মেদিনীপুরে তৃণমূল প্রার্থী করেছে অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে। আর পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে দেবাংশু ভট্টাচার্যকে। এই আসনে বিজেপি প্রার্থী করতে পারে সাবেক বিচারপতি ও সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে।

গত নির্বাচনে তৃণমূলের অভিযোগ ছিল,বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বহিরাগতদের প্রার্থী করেছে। সেই অভিযোগ এবার বুমেরাং হয়ে গেল। তৃণমূলের ঘোষিত তিন প্রার্থীই ভিনরাজ্যের, বহিরাগত। তাঁরা হলেন ইউসুফ পাঠান, শত্রুঘ্ন সিনহা ও কীর্তি আজাদ। কীর্তি আজাদ ও শত্রুঘ্ন সিনহা বিহারের আর ইউসুফ পাঠান গুজরাটের বাসিন্দা।

এবার আরেকটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি প্রার্থীর সাবেক স্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়ে রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে তাদের দলের নেতা সৌমিত্র খাঁকে। আর তৃণমূল এই আসনে প্রার্থী করেছে সৌমিত্র খাঁর সাবেক স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলকে। ফলে এবার বিষ্ণুপুর আসনে স্বামী–স্ত্রীর লড়াই জমে উঠছে। রাজ্যবাসীও তাকিয়ে ওই লড়াইয়ের দিকে।