
ইসরায়েলি দখলদারত্বের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের জীবন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের সময়কালের চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
৫১ বছর বয়সী ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা বুধবার সন্ধ্যায় জোহানেসবার্গ বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন। তিনি ইসরায়েলের নৌ অবরোধ সত্ত্বেও গাজায় খাদ্য ও মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে তিউনিসিয়া থেকে একটি ছোট জাহাজের বহরে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি বলেন, ‘আমরা অনেকেই ফিলিস্তিনের দখলকৃত অঞ্চল পরিদর্শন করেছি। আমরা সবাই একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে ফিলিস্তিনিরা বর্ণবাদ ব্যবস্থার চেয়েও অনেক খারাপ এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।’
ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, বিশ্ব সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে, ঠিক যেভাবে তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।’
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দখলদারত্ব এবং অর্থনৈতিক অবরোধের মধ্যে বসবাস করা ফিলিস্তিনিদের অবস্থার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদের যুগের সঙ্গে তুলনা সঠিক নয় বলে মনে করে ইসরায়েল। ওই সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ জনগণ একটি নিপীড়নমূলক শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু সরকারের শাসনের অধীনে ছিল।
এ ছাড়া ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহে কঠোর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে, তাদের লক্ষ্য সশস্ত্র গ্রুপ হামাসের কাছে অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকানো।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, গাজায় এখন ব্যাপকভাবে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। একটি নির্ভরযোগ্য ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, সেখানকার এক-চতুর্থাংশ মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।
ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের সাহায্যকারী নৌযানের বহরে ১০ জন দক্ষিণ আফ্রিকান স্বেচ্ছাসেবীর একটি দলে যোগ দিচ্ছেন। এ বহরে সুইডেনের মানবাধিকার কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ৪৪টি দেশের কয়েক শ মানুষ ও কয়েক ডজন নৌযান রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার শাসক দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস তাঁদের এই মিশনকে ‘নিজেদের মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে মিল রয়েছে’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি জোর দিয়ে বলেন, বিভিন্ন দেশের তীব্র চাপ ও নিষেধাজ্ঞার ফলে ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে। তিনি বলেন, ‘তারা তখন বর্ণবাদী দক্ষিণ আফ্রিকাকে একঘরে করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত সেটা ভেঙে পড়তে বাধ্য হয়েছিল। আমরা মনে করি, ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রেও এখন সেই সময় এসেছে।’