Thank you for trying Sticky AMP!!

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

ইরানের হামলার পর ইসরায়েলের সামনে এখন যেসব পথ খোলা

ইরানি কনস্যুলেটে হামলার পর গতকাল ইসরায়েল লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে তেহরান। এ হামলার পর দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। তবে এরই মধ্যে প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। পাল্টাপাল্টি এ হামলার মধ্যে দেশটির সামনে এখন কোন কোন পথ খোলা রয়েছে, ইরানই–বা পরবর্তী সময়ে কী করতে পারে, তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বিবিসির নিরাপত্তাবিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার।

সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে তেহরান। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, ওই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশই আকাশে থাকতে ধ্বংস করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন—এরপর কী হবে? সহজ জবাবটা হলো, মোটাদাগে তা নির্ভর করছে ইরানের হামলার জবাব ইসরায়েল কীভাবে দেবে তার ওপর।

Also Read: ইসরায়েলে কী রকম অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাল ইরান

গতকাল শনিবার ওই হামলার পর ইরানের ভাষ্যটা ছিল এমন, ‘হিসাব চুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানেই ইতি টানছি আমরা। আপনারা পাল্টা হামলা চালাবেন না। এর ব্যতিক্রম হলে জবাবে আমরা আরও শক্তিশালী হামলা চালাব। ওই হামলা আপনারা রুখতে পারবেন না।’

তবে ইসরায়েল এর মধ্যেই ইরানের হামলার ‘উল্লেখযোগ্য জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইসরায়েলের বর্তমান সরকারকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কট্টরপন্থী সরকারগুলোর একটি বলে মনে করা হয়। সংকটময় এ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ইরান ও ইসরায়েল—দুই পক্ষকেই সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

ইসরায়েলে শনিবার ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালালে জেরুজালেমের আকাশে বিস্ফোরণের সঙ্গে আলোর ঝলকানি দেখা যায়। ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছে এএফপি। সেই ভিডিও থেকে নেওয়া চিত্র

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। জবাবে সেদিন থেকেই ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাই বিভিন্ন দেশ থেকে যতই সংযত থাকার আহ্বান জানানো হোক না কেন, গতকালের হামলার জবাব ইসরায়েলের বর্তমান যুদ্ধকালীন সরকার দেবে না, এমন সম্ভাবনা কম।

Also Read: ইসরায়েলে ইরানের হামলায় এ পর্যন্ত কী ঘটল

তবে ইসরায়েল চাইলে প্রতিবেশী দেশগুলোর কথায় কান দিতে পারে এবং সে অনুযায়ী ‘কৌশলগত ধৈর্য’ ধরতে পারে। এর অর্থ ইরানের মতো একইভাবে পাল্টা হামলা না চালানো এবং এ অঞ্চলে হিজবুল্লাহর মতো ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাওয়া। এ কাজ বছরের পর বছর ধরে করে আসছে ইসরায়েল।

Also Read: ইরানের হামলায় কত ক্ষয়ক্ষতি, জানাল ইসরায়েলি বাহিনী

ইসরায়েল যদি পাল্টা পদক্ষেপ নিতেই চায়, তাহলে গতকাল যেসব ঘাঁটি থেকে ইরান হামলা চালিয়েছে, সেখানে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে তারা। অথবা আরও বড় পরিসরে কিছু করতে চাইলে তারা ইরানের শক্তিশালী রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) বিভিন্ন ঘাঁটি, প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও কমান্ড সেন্টারে হামলা করতে পারে। তবে এতে ইরানের পাল্টা প্রতিশোধ নেওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।

Also Read: ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়ে কী বললেন বাইডেন

এখানে একটা প্রশ্ন ওঠে—যুক্তরাষ্ট্র কী করবে? ইসরায়েল–ইরান পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে এ অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী কি তেহরানের সঙ্গে পুরোপুরি যুদ্ধে জড়াবে? উপসাগরীয় অঞ্চলে ছয়টি আরব দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনা রয়েছে। মার্কিন সেনারা সিরিয়া, ইরাক ও জর্ডানেও অবস্থান করছেন। যুদ্ধের ব্যাপ্তি বাড়লে এসব দেশে মার্কিন বাহিনী ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানা হতে পারে।

ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান

পাল্টা হামলার শিকার হলে ইরান আরেকটি পদক্ষেপও নিতে পারে। এর হুমকি অবশ্য তারা বহু আগে থেকেই দিয়ে আসছে। সেটি হলো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধের চেষ্টা করা। এ জন্য তারা মাইন ও ড্রোন ব্যবহার করতে পারে। এতে বাধার মুখে পড়তে পারে বিশ্বের এক–চতুর্থাংশ জ্বালানি তেল পরিবহন।

Also Read: ইসরায়েল নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা জানালেন ইরানি সেনা কর্মকর্তা

আসলে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা ও গতকাল ইসরায়েলের পাল্টা হামলা একটা দুঃস্বপ্নের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। দুই দেশের এ পদক্ষেপের কারণে আঞ্চলিকভাবে বড় পরিসরে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলোর জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এমন কোনো পরিস্থিতি এড়াতে এ মুহূর্তে দিনভর কাজ করে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার।