নেদারল্যান্ডসের হেগে পিস প্যালেস ভবন। এখানেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) অবস্থান
নেদারল্যান্ডসের হেগে পিস প্যালেস ভবন। এখানেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) অবস্থান

আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলায় যোগ দিল ব্রাজিলও

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় পক্ষভুক্ত হয়েছে ব্রাজিলও। মামলায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের গাজায় ‘জাতিগত নিধন’ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত শুক্রবার বিচার আদালতের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ব্রাজিল আইসিজে বিধির ৬৩ নম্বর অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে মামলায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতিসংঘের যেকোনো সদস্যরাষ্ট্র মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যদি মামলাটি এমন কোনো চুক্তির ব্যাখ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, যেটির পক্ষ তারা নিজেও। ব্রাজিল এই অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে, ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘন করছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরায়েলকে এখন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যেন তারা ‘অন্তর্ভুক্তির ঘোষণার’ বিষয়ে লিখিত পর্যবেক্ষণ জমা দেয়।

ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত জুলাই মাসে বলেছিল, তারা এ মামলায় যুক্ত হতে চায়। ইসরায়েলের গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে তারা বলেছে, ইসরায়েলের ‘দায়মুক্তির’ বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইন ক্ষুণ্ন করছে।

ব্রাজিল এখন সেই দেশগুলোর কাতারে যুক্ত হলো, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত নিধন’-এর মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে আছে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, তুরস্কসহ আরও কিছু দেশ।

ব্রাজিল এখন সেই দেশগুলোর কাতারে যুক্ত হলো, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত নিধন’-এর মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে আছে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, তুরস্কসহ আরও কিছু দেশ।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার মামলায় আইসিজের চূড়ান্ত রায় আসতে আরও কয়েক বছর লাগতে পারে। তবে আদালত ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। এর মাধ্যমে ইসরায়েলকে গাজায় জাতিগত নিধন ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়া ও মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমালোচনা ক্রমাগত বাড়লেও তারা আন্তর্জাতিক আদালতের রায় উপেক্ষা করে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা ও পশ্চিম তীরে আরও বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। তারা দ্রুত ফিলিস্তিনি এলাকার প্রায় সম্পূর্ণটা দখলের পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

আদালত বলেছেন, ইসরায়েলিরা অবৈধভাবে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আছে। ইসরায়েল সেখানে যে নীতি অবলম্বন করছে, তা ওই এলাকার দখল নেওয়ার সমতুল্য।

তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমালোচনা ক্রমাগত বাড়লেও তারা আন্তর্জাতিক আদালতের রায় উপেক্ষা করে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা ও পশ্চিম তীরে আরও বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তারা দ্রুত ফিলিস্তিনের প্রায় সম্পূর্ণটা দখলের পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে।

নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ক্রমাগত বলছে, ইসরায়েল গাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্ররা দেশটির জন্য অস্ত্র সরবরাহ করছে ও অর্থায়ন চালিয়ে যাচ্ছে।

ওয়াশিংটন আইসিজের মামলার আইনি ভিত্তি বা গ্রহণযোগ্যতা প্রত্যাখ্যান করেছে। এ নিয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছেন এবং দেশটির সমালোচনা করেছেন।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্যদের ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আইসিসি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর এ পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্র।