
ফিলিস্তিনের উত্তর গাজায় একটি স্কুলে নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন অসহায় ফিলিস্তিনিরা। হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনই শিশু। এ প্রাণহানির পর কোনো প্রমাণ হাজির না করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ওই স্কুলে ‘সন্ত্রাসীরা’ অবস্থান করছিল।
গাজা নগরীর ওই স্কুলের নাম ফাহমি আল–জারজাউই স্কুল। আজ সোমবার হামলায় স্কুলটির প্রায় অর্ধেক ধ্বংস হয়ে যায়। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন অনেকে। গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮টি শিশু রয়েছে। এ হামলা স্পষ্টভাবে ‘জাতিগত নিধন ও গণহত্যার’ অংশ। গাজায় প্রায় ৬০০ দিন ধরে এমন অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
স্কুলে বহু বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় মানুষের আশ্রয়শিবিরগুলোয় ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও পদ্ধতিগতভাবে’ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এটি সব আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইনের লঙ্ঘন। একই সঙ্গে সর্বোচ্চসংখ্যক বেসামরিক মানুষ হত্যার একটি ‘নগ্ন অপচেষ্টা’।
স্কুলটিতে হামলার জন্য বরাবরই মতোই পুরোনো অজুহাত দেখিয়েছে ইসরায়েল। কোনো প্রমাণ না দিয়ে তারা বলেছে, স্কুলটিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। ইসরায়েলের বেসামরিক লোকজন ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালানোর জন্য সেখানে সন্ত্রাসীরা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনা করছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল বাহিনী। এ হামলার অন্যতম বড় লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে স্কুল ও হাসপাতালগুলো। এর আগে গত বছরের আগস্টে গাজা নগরীর আল–তাবিন স্কুলে ব্যাপক হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এ হামলায় ফজরের নামাজ আদায় করতে স্কুলটিতে জড়ো হওয়া শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন।
এদিকে আজ সকালে উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় একটি পরিবারের বাড়িতে হামলা চালানো হলে আরও ১৯ জন নিহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ সময়ে আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার ফিলিস্তিনি।