
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী শামখানি গতকাল বুধবার বলেছেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির ব্যাপারে কড়া বিধিনিষেধ মেনে নিতে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলী শামখানি বলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তেহরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার বিষয়ে রাজি হতে পারে। পাশাপাশি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বন্ধ করতে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার দিতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরে ইরান রাজি হবে কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে শামখানি ‘হ্যাঁ’ জানিয়ে বলেন, যদি নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ তুলে নেওয়া হয়।
শামখানি এমন সময় এ মন্তব্য করলেন, যখন তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে চতুর্থ দফায় বৈঠক হয়েছে। গত রোববার এ বৈঠক হয়। গত মাসে দেশ দুটির মধ্যে এ ইস্যুতে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইরান ও পশ্চিমা কয়েকটি দেশের মধ্যে ২০১৫ সালে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে আসে। এর এক বছর পর ইরানও চুক্তির বাধ্যবাধকতা থেকে ক্রমেই সরে আসে। এরপর এবারই প্রথম দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি আলাপ-আলোচনা হলো।
২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানকে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে দেশটি ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৯০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চলতি সপ্তাহে বলেন, ইরানই একমাত্র দেশ, যে পারমাণবিক অস্ত্র না থাকা সত্ত্বেও এত উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে তেহরান শুরু থেকেই বলে আসছে, তারা শুধু শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
এদিকে আলাপ-আলোচনার মধ্যেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও তেল খাতকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। সর্বশেষ গত সোমবার আরেকটি নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে।