ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী ওমর এম ইয়াঘি
ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী ওমর এম ইয়াঘি

জর্ডানের শরণার্থীশিবিরে বড় হওয়া ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানীর নোবেল জয়

জর্ডানে একটি শরণার্থীশিবিরে জন্ম ও শৈশব কাটানো এক ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন। গতকাল বুধবার রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

‘ধাতব-জৈব কাঠামো’ বা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে নতুন একধরনের আণবিক কাঠামো আবিষ্কারের জন্য আরও দুই বিজ্ঞানীর সঙ্গে নোবেল জেতেন ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের সন্তান ওমর এম ইয়াঘি। বাকি দুই বিজ্ঞানী হলেন সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন।

নোবেল জয়ের খবর প্রকাশের পর নোবেল প্রাইজ আউটরিচের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অ্যাডাম স্মিথকে টেলিফোনে একটি সাক্ষাৎকার দেন ইয়াঘি। ইয়াঘি বলেন, নোবেল জয়ের খবর শুনে তিনি বিস্মিত, আনন্দিত ও অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন।

স্মিথ বলেন, ৬০ বছর বয়সী ইয়াঘি সম্ভবত জর্ডানে জন্ম নেওয়া প্রথম নোবেল বিজয়ী।

আমি খুব সাধারণ একটি বাড়িতে বড় হয়েছি। একটি ছোট কক্ষে আমরা অনেকে থাকতাম। আমাদের যে গবাদিপশু পালন করতাম, সেগুলোও একই ঘরে থাকত
ওমর এম ইয়াঘি, রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী

জর্ডানের রাজধানী আম্মানে একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থীশিবিরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা এম ইয়াঘির। সেখান থেকে ১৫ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

আম্মানের শরণার্থীজীবনের কথা মনে করে ইয়াঘি বলেন, ‘আমি খুব সাধারণ একটি বাড়িতে বড় হয়েছি। একটি ছোট কক্ষে আমরা অনেকে থাকতাম। আমাদের যে গবাদিপশু পালন করতাম, সেগুলোও একই ঘরে থাকত। একটি শরণার্থী পরিবারে আমার জন্ম হয়েছিল এবং আমার মা–বাবা খুব একটা লেখাপড়া জানতেন না।’

এটা দীর্ঘ এক যাত্রা আর বিজ্ঞান আপনাকে এ সুযোগ করে দেবে। পৃথিবীতে যেসব ক্ষেত্র সবাইকে সমান সুযোগ দেয়, তার মধ্যে বিজ্ঞান অন্যতম বলেও মন্তব্য করেন ইয়াঘি।

এই বিজ্ঞানী আরও বলেন, সব জায়গায় বুদ্ধিমান, প্রতিভাবান ও দক্ষ মানুষ রয়েছেন। ঠিক এ কারণে তাঁদের সম্ভাবনা বিকাশের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

ইয়াঘির নোবেল জয়ের খবর প্রকাশের পর জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ (দ্বিতীয়) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। বাদশাহ আবদুল্লাহ লেখেন, ‘জর্ডানের বিজ্ঞানী অধ্যাপক ওমর ইয়াঘি ২০২৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার জেতায় (আমরা) গর্বিত। তাঁর এ অর্জন জর্ডানের জন্য গর্বের।’

ইয়াঘি ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি এখন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

স্মিথ বলেন, ৬০ বছর বয়সী ইয়াঘি সম্ভবত জর্ডানে জন্ম নেওয়া প্রথম নোবেল বিজয়ী।

ইয়াঘির নোবেল জয়ের খবর প্রকাশের পর এক্সে এক পোস্টে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মদ শেহাদ এই বিজ্ঞানী ছেলেবেলায় যে ভয়াবহ পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন, সে কথা উল্লেখ করেন।

সাংবাদিক শেহাদ বলেন, ইসরায়েল গাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। আগেও চালিয়েছে। তারা গাজার শত শত শিক্ষাবিদকে হত্যা করেছে।

ইয়াঘি বলেন, সুন্দর জিনিস তৈরি করতে এবং বুদ্ধিদীপ্ত সমস্যার সমাধান করতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।