
লেবাননজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার এসব হামলা হয়। ইসরায়েলের দাবি, হামলায় ইরানি বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এক সদস্য এবং হিজবুল্লাহর এক যোদ্ধাসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) খবরে বলা হয়, গতকাল দুপুরে দেশটির হারমেল এলাকার হোশ আল-সায়েদ আলী সড়কে একটি গাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল। এ ঘটনায় গাড়িতে থাকা দুই আরোহী নিহত হন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, হামলায় আইআরজিসির কুদস ফোর্সের সদস্য হোসেন মাহমুদ মারশাদ আল-জাওহারি নিহত হয়েছেন। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের আনসারিয়া এলাকায় তাঁর গাড়িতে হামলা হলে তিনি নিহত হন।
ইসরায়েলের দাবি, জাওহারি ইরানের নির্দেশনায় সিরিয়া ও লেবানন থেকে ইসরায়েলবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তবে আইআরজিসির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) খবরে বলা হয়, দক্ষিণ লেবাননের বিনতে জুবাইল জেলার সাফাদ আল-বাতিখ এলাকায় একটি পিকআপ ট্রাকে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
আলাদা করে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরয়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হওয়া ওই হামলায় দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক সদস্য নিহত হয়েছেন।
২০২৪ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলেও প্রায় প্রতিদিনই লেবাননে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে অন্তত ১২৭ জন বেসামরিক নাগরিকসহ ৩০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সংঘাতবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা এসিএলইডির তথ্যমতে, ইসরায়েল গত এক বছরে লেবাননজুড়ে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, তারা হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ধ্বংস ও গোষ্ঠীটিকে পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যেই এসব অভিযান চালাচ্ছে। তবে দফায় দফায় এসব হামলাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চরম লঙ্ঘন বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।