মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া তালেবানকে স্বীকৃতি নয়: পাকিস্তান

কাবুলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে তালেবান যোদ্ধাদের পাহারা
 ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানের দখলে নিয়ে নতুন সরকার গড়তে যাচ্ছে তালেবান। এ পরিস্থিতিতে তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের প্রশ্ন সামনে এসেছে। এ বিষয়ে প্রতিবেশী পাকিস্তান জানিয়েছে, এখনই তালেবানকে স্বীকৃতি দেবে না দেশটির সরকার। এজন্য আগে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করবে ইসলামাবাদ। খবর আল জাজিরা ও বিবিসির।

আল জাজিরার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আফগান পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বৈঠক শেষে দেশটির তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত শতকের নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে যখন তালেবান সরকার গঠন করেছিল তখন যে তিনটা দেশ সবার আগে স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার একটি পাকিস্তান। তবে এবার তালেবান সরকারকে এখনই স্বীকৃতি দেবে না পাকিস্তান।’

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তালেবান সরকারকে স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তাদের পরামর্শ নেওয়া হবে।’

ফাওয়াদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘রক্তপাত ছাড়াই কাবুলে ক্ষমতার পালা বদল ঘটেছে। দেশটিতে রক্তপাত এড়ানো সম্ভব হওয়ায় পাকিস্তান সরকার বেশ খুশি।’

এদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারকে জোরপূর্বক উৎখাত করেছে। নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে দেশছাড়া করেছে। তাই আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠন করলে ওই সরকারকে কানাডা আপাতত স্বীকৃতি দেবে না। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো।

গত শতকের নব্বইয়ের দশকে যে তালেবানের হাত থেকে কাবুল কেড়ে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, দুই দশক পর দেশটিতে সেই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিস্থিতির মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। রোববার এক সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট করে বলেন, ‘ভবিষ্যৎ আফগান সরকার তার জনগণের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখলে ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় না দিলে তার সঙ্গে আমরা কাজ করতে পারি এবং সরকারকে স্বীকৃতি দিতে পারি।’ অর্থাৎ, শর্ত সাপেক্ষে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে রাজি বাইডেন প্রশাসন। আর এ জন্য তালেবানকে আফগান নারী ও কিশোরীদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। দেশটিতে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া যাবে না।