পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের দুই ছেলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাঁরা হয়তো কখনোই আর তাঁদের বাবাকে দেখতে পারবেন না। ইমরান খানকে একটি ‘ডেথ সেল’-এ রেখে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। কারাগারে রাখার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি।
স্কাই নিউজের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড উইথ ইয়ালদা হাকিম’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কাসিম ও সুলাইমান খান এ আশঙ্কার কথা জানান। তাঁরা বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে তাঁদের বাবা কারাগারে আছেন। বাবার সঙ্গে তাঁরা কয়েক মাস কথা বলতে পারেননি।
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে যেভাবে রাখা হয়েছে, তা বর্ণনা করে কাসিম বলেন, ইমরান খান দুই বছরের বেশি সময় ধরে একটি নির্জন সেলে বন্দী আছেন। সেখানে তিনি নোংরা পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁর আশপাশে এমন বন্দীরা আছেন যাঁরা হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুপথযাত্রী। সেখানকার পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ।’ কাসিম আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। এখান থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় পাওয়া সত্যিই খুব কঠিন…। আমরা আশঙ্কা করছি, হয়তো কখনো তাঁকে আর দেখতেই পাব না।’
সুলাইমান বলেন, তাঁর বাবা ২৩ ঘণ্টাই সেলে কাটান। সেটিকে একটি ‘ডেথ সেল’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র ঘোষণা দিয়েছেন যে ইমরান খানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গনিরোধ সেলে রাখা হয়েছে। সুলাইমান বলেন, তাঁর বাবাকে কারাগারে রাখার ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি। কারাবন্দীর জন্য আন্তর্জাতিক আইনও পূরণ করা হয়নি।
এদিকে পিটিআই জানিয়েছে, কারাগারে কয়েক মাস ধরে ইমরানের সঙ্গে কারও সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। দলটির আপত্তির মুখে প্রতি মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এরপর গত সপ্তাহে বোন উজমা খানকে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছিল। তবে চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার আবার বাধা দেওয়া হয়।
এদিন ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করতে পেরে কারাগারের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পিটিআইয়ের নেতা–কর্মীরা। তাঁদের নেতৃত্ব দেন ইমরানের বোন আলিমা খান। সঙ্গে ছিলেন অন্য দুই বোন উজমা ও নোরিন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এলাকা ছাড়তে বলে পুলিশ। এর পরপরই কারাগার চত্বরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।