
পেরুর নবনির্বাচিত বামপন্থী প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলিও ২৮ জুলাই শপথ নিলেও এখন পর্যন্ত নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেননি। শপথ অনুষ্ঠানে তিনি দেশের অর্থনীতিতে একটি দায়িত্বশীল পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ জন্য দেশটির স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দেন তিনি।
নিজস্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নতুন সংবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছেন পেদ্রো কাস্তিলিও। ধারণা করা হচ্ছে, লাতিন আমেরিকার জনপ্রিয় বামপন্থী নেতা ভেনেজুয়েলার হুগো চাভেজ ও বলিভিয়ার ইভো মোরালেসের দর্শন পেরুর নতুন সংবিধানে স্থান পাবে।
দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে ইভো মোরালেসের মতো পোশাক পরিধান করেও নজর কেড়েছেন পেদ্রো। ৫১ বছর বয়সী বামপন্থী নেতা পেদ্রো কাস্তিলিও পেশায় একজন শিক্ষক। দেশটির ২০০তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের দিন গত বুধবার শপথ নেন তিনি। শপথের ঠিক দুই দিন আগেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাপ্য বেতন গ্রহণ না করার ঘোষণা দেন পেদ্রো কাস্তিলিও। তিনি জানান, শিক্ষকতা পেশা থেকে যে অর্থ পেতেন, সেই পরিমাণ অর্থ নিয়ে চালাবেন সংসার।
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দেড় মাস পর পেদ্রোকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। গত ৬ জুন দেশটিতে দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় তা পর্যালোচনা করে ফল ঘোষণা করতে দেড় মাস সময় লেগে যায়। কাস্তিলিওর নির্বাচনী প্রতিপক্ষ ডানপন্থী কিকো ফুজিমোরির আনা নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ পর্যালোচনা শেষে স্থানীয় সময় গত সোমবার রাতে ফল ঘোষণা করে স্বাধীন সংস্থা ন্যাশনাল ইলেকশনস জুরি (জেএনই)। বিজয়ী প্রার্থী কাস্তিলিও ৫০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রতিপক্ষ কিকো পেয়েছেন ৪৯ শতাংশের কিছু বেশি ভোট। কিকোকে ৪৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন কাস্তিলিও।
দুই সন্তানের জনক কাস্তিলিওর জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৯ অক্টোবর। ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পেরুর এক অজপাড়াগাঁয়ের দরিদ্র শিক্ষক ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ২০০২ সালে রাজনীতির ময়দানে নাম লেখান। এরপরই স্থানীয় কাউন্সিলের মেয়র হন। মাত্র চার বছর আগে জাতীয়ভাবে পরিচিতি পান তিনি। সে সময় তিনি দেশটির শিক্ষকদের বেতন নিয়ে সফল ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেন। এই ধর্মঘটে হাজারো শিক্ষক অংশ নেন। অপরদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কিকো রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। তাঁর বাবা আলবার্তো ফুজিমোরি পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। দুর্নীতি ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হয়ে আলবার্তো ২৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। কিকো ডানপন্থী দল পপুলার ফোর্সের নেতা।