
কলম্বিয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার আলাদা দুটি হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত অনেকে। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর নিরাপত্তা সংকটে থাকা কলম্বিয়ার জন্য সংকট এ ঘটনায় আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে, ওইদিন পশ্চিমাঞ্চলীয় ক্যালি শহরের একটি ব্যস্ত রাস্তায় গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি।
একই দিন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মেডেলিন শহরের কাছে এক গ্রামীণ এলাকায় পুলিশের একটি হেলিকপ্টারে ড্রোন হামলা হয়। এ হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন।
এসব হামলার ঘটনা আগামী বছরের নির্বাচনকে সামনে রেখে কলম্বিয়ার নাজুক শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
কলম্বিয়ার তৃতীয় জনবহুল শহর ক্যালি। স্থানীয় মেয়র আলেহান্দ্রো এদের শহরটিতে সামরিক আইন জারি করেছেন। তিনি শহরে বড় ট্রাক প্রবেশে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। হামলার ঘটনায় তথ্য জানাতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পারলে ১০ হাজার ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন মেয়র।
কলম্বিয়ার তৃতীয় জনবহুল শহর ক্যালি। স্থানীয় মেয়র আলেহান্দ্রো ইতিমধ্যে শহরটিতে সামরিক আইন জারি করেছেন। তিনি শহরে বড় ট্রাক প্রবেশে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পারলে ১০ হাজার ডলার পুরস্কার প্রদানেরও ঘোষণা করেছেন মেয়র।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সন্ত্রাসের কাছে মাথা নোয়াবে না রাষ্ট্র। এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ক্যালিতে মার্কো ফিদেল সুয়ারেজ মিলিটারি অ্যাভিয়েশন স্কুলকে নিশানা করে ওই গাড়িবোমা হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণে রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ নিহত হন। অনেক বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেন, ‘বিমানঘাঁটির কাছে কোনো কিছু বিস্ফোরণ হওয়ার মতো ভয়াবহ শব্দ পেয়েছি।’
কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ বিস্ফোরণকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। এ ঘটনায় ফার্ক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা ইভান মর্ডিসকোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধী চক্র ‘নার্কো কার্টেল’ তথা ‘মর্ডিসকো’-কে দায়ী করেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যালে দেল কাউকা, কাউকা ও নারিনো এলাকায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ হারানোর ক্ষোভ থেকে কাপুরুষোচিত এ হামলা হয়েছে। পাবলিক ফোর্স (সমন্বিত সামরিক ও পুলিশ বাহিনী) এ হুমকির অনেকটাই নির্মূল করেছে।’
এদিকে পুলিশ হেলিকপ্টারে হামলা প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেন, কোকা পাতার চাষ বন্ধ করার অভিযান চালাতে হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। কোকা পাতা থেকে কোকেন তৈরি করা হয়।
ড্রোন হামলায় হেলিকপ্টারটি ভূপাতিত। এতে হেলিকপ্টারে থাকা ১২ কর্মকর্তা নিহত হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, দেশের উত্তরের আমালফির বনাঞ্চলে ঘনকালো ধোঁয়া উঠছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, গেরিলা সংগঠন ফার্কের (বর্তমানে বিলুপ্ত) সবচেয়ে বড় দলছুট শাখা ইএমসি এ হামলা চালিয়েছে।
কলম্বিয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং আধাসামরিক বাহিনী ও মাদক চক্রগুলোর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বেড়েছে।
বাড়ছে ড্রোন হামলাও। ২০২৪ সালে এ ধরনের ১১৫টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। হামলাগুলোর বেশির ভাগই চালিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।
গত সপ্তাহে কলম্বিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর একটি তল্লাশিচৌকিতে ড্রোন হামলায় তিন সেনা নিহত হন।