কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন গুস্তাভো পেত্র

গুস্তাভো পেত্রো
ফাইল ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার সাবেক গেরিলাযোদ্ধা ও সাবেক মেয়র গুস্তাভো পেত্র (৬২) রোববার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। তিনিই হচ্ছেন দেশটিতে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত কোনো বামপন্থী প্রেসিডেন্ট। অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং মাদক-সহিংসতায় সংকটে পড়া দেশটিতে ব্যাপক সংস্কার আনার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

কলম্বিয়ার সম্প্রতি জনপ্রিয়তা হারান ডেমোক্রেটিক সেন্টার পার্টি থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইভান ডুকু। ২০১৮ সালের আগস্টে ডুকু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কলম্বিয়ায় অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। এ ছাড়া বেকার সমস্যা, নিরাপত্তাব্যবস্থার অবনতিসহ বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হন দেশটির জনগণ। ডুকুর বিরুদ্ধে জনগণ বিক্ষোভ শুরু করেন। গত জুন মাসে ডুকুকে হারিয়ে চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন গুস্তাভো। দেশটির কংগ্রেসে (পার্লামেন্ট) রয়েছে বাম আধিপত্য। এখান থেকে তিনি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমর্থন পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বোগোটায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানের আগে গুস্তাভো পেত্র বলেন, তাঁর সরকার কলম্বিয়ার জন্য এমন কিছু আনবে, যার জন্য কয়েক শতক ধরে অপেক্ষা করা হচ্ছে। আর তা হচ্ছে শান্তি ও স্থিতিশীলতা। এমন একটি সরকার যাত্রা শুরু করছে, যেটি পরিবেশগত ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করবে।

নির্বাচনী প্রচারের সময় পেত্র ধনীদের জন্য কর বৃদ্ধি করে তা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের কথা বলেন। এ ছাড়া দেশটিতে গত বছর বিক্ষোভকারীদের পুলিশি নিপীড়নের বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা কুড়ায়। তিনি পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতিও দেন। এ ছাড়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে স্থগিত সম্পর্ক পুনঃস্থাপন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে তেল অনুসন্ধান স্থগিত, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সক্রিয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

রিসোর্স সেন্টার ফর কনফ্লিক্ট অ্যানালাইসিসের বিশ্লেষক জর্জ রেস্ট্রেপো বলেন, পেত্র যে জায়গা থেকে শুরু করছেন, তা ঈর্ষণীয় অবস্থান। কংগ্রেসে তাঁর বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। এ ছাড়া রাজপথেও তাঁর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোনো সরকারের পক্ষে এত কিছু দেখতে পাওয়া যায়নি।

পেত্রর প্রেসিডেন্সিকে অন্য অর্থেও ঐতিহাসিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাঁর পাশে থাকবেন দেশটির প্রথম আফ্রো-কলম্বিয়ান মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট, পরিবেশ ও নারী অধিকারকর্মী ফ্রান্সিয়া মার্কেজ।