Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্পের অনুদান বন্ধের ঘোষণা দুঃখজনক, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক

তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণাকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুসের। করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দীর্ঘদিনের অকৃত্রিম বন্ধু। আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সম্পর্ক চলমান থাকবে।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি করোনা মোকাবিলায় বিশ্বকে এক হতে বলেন।

তেদরোস আধানম বলেন, তাঁর সংস্থা এখন পর্যন্ত অংশীজনদের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো খুঁত আছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে, সম্পর্কের গলদগুলো সঠিকভাবে পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে এখন এসব নিয়ে কথা বলার সময় নয়। এখন সময় বিশ্ববাসীকে এক হয়ে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা। তিনি এ ভাইরাসকে ভয়ংকর শক্র বলে অভিহিত করেন।

এর আগে বুধবারই বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ছিলেন ট্রাম্প। জাতিসংঘের এই সংস্থাটিকে অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেবেন বলে তিনি আগেই হুমকি দিয়েছিলেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের অন্যতম প্রাদুর্ভাব কেন্দ্র এখন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও মৃত্যুর হার সবাইকে টপকে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। করোনার মুখে দেশটির অবস্থা অনেকটা হযবরল। এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘লক্ষ্যবস্তু’ করেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিতে ডব্লিউএইচও তার মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি এই সংস্থার বিরুদ্ধে ভাইরাসটির বিস্তার রোধে অব্যবস্থাপনা ও লুকোচুরির অভিযোগ আনেন। এ জন্য ডব্লিউএইচওকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে বলে ট্রাম্প তাঁর ঘোষণায় বলেন।

হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা যাচাই করে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। তার আগ পর্যন্ত সংস্থাটিতে তহবিল বন্ধ করার নির্দেশ প্রশাসনকে দিয়েছি।’ এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয় ডব্লিউএইচওকে। কিন্তু কোনো কারণে ডব্লিউএইচও খুব চীনকেন্দ্রিক।

ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুসেরও ওপর চটে আছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইতিমধ্যে তাঁকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

তবে ট্রাম্পের সমালোচকেরা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ডব্লিউএইচওকে বলির পাঁঠা বানাচ্ছেন। এটা সত্য, ডব্লিউএইচওর সবচেয়ে বড় একক তহবিলদাতা যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর ৪০ কোটি ডলার দিয়েছে দেশটি, যা সংস্থাটির মোট বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ।

ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তহবিলে চীনের নির্ধারিত অবদান ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবী তহবিল ছিল ১ কোটি ডলার। গত মার্চে এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ৬৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের একটি তহবিল গঠনের কাজ শুরু করে ডব্লিউএইচও। এ ছাড়া ১ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন আবেদন করার পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির।