Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরেক হুইসেলব্লোয়ার

জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালীন গত ২৫ সেপ্টেম্বর এক পার্শ্ব বৈঠকে মিলিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরেক হুইসেলব্লোয়ার বা সতর্কতাকারীর আবির্ভাব ঘটেছে। প্রথম হুইসেলব্লোয়ারের আইনজীবীরাই উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন দ্বিতীয় জনকে। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার আইনজীবীরা দাবি করেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বিতর্কিত ফোনালাপের বিষয়ে আরেক হুইসেলব্লোয়ার অভিযোগ করেছেন। তাঁকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে।

সিএনএনের খবরে জানানো হয়, আইনজীবী মার্ক জেইড সিএনএনকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মার্ক জেইড বলেছেন, তিনি এবং তাঁর দলের অন্য আইনজীবীরা দ্বিতীয় ব্যক্তিকে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় ব্যক্তিও একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। বিষয়টির সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে এবং প্রত্যক্ষ তথ্য রয়েছে, যা প্রথম হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগের পক্ষে যায়। দ্বিতীয় ব্যক্তি গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলেছেন।

দ্বিতীয় হুইসেলব্লোয়ার প্রথম হুইসেলব্লোয়ারের মতো লিখিত অভিযোগ করেননি এবং এটার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন মার্ক। তিনি জানান, আইন অনুসারে এ ধরনের তথ্য দেওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় গোপন রেখে সুরক্ষা দেওয়া হয়।

মার্কের দলের আরেক আইনজীবী অ্যান্ড্রু বাকাজ বলেছেন, তাঁরা ‘একাধিক কর্মকর্তাকে’ উপস্থাপন করছেন। তবে সেটা কতজন তা তিনি উল্লেখ করেননি। তিনি জানান, এই মুহূর্তে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই অভিযোগে দুই ব্যক্তির তথ্য যুক্ত করা হবে।
প্রথমবার মার্ককে উদ্ধৃত করে দ্বিতীয় হুইসেলব্লোয়ার সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে গণমাধ্যম এবিসি।

ট্রাম্প-ইউক্রেন ফোনালাপের বিষয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় হুইসেলব্লোয়ার অভিযোগ থেকে।
হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগে বলা হয়, গত ২৫ জুলাই ইউক্রেনের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে অভিনন্দন জানাতে ফোন করেন ট্রাম্প। ফোনে তিনি ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে জেলেনস্কিকে চাপ দেন।

বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর শীর্ষ আইনজীবীর কাছে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন। বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি সিআইএর একজন কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে হুইসেলব্লোয়ারের পরিচয় গোপন রাখাসহ তাঁর আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি কঠোরভাবে মেনে চলা হয়।

ট্রাম্পের দাবি, বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ইউক্রেনের একটি গ্যাস কোম্পানির ব্যাপারে সে দেশের সরকার যে তদন্ত শুরু করে, তা বন্ধে তিনি (বাইডেন) চাপ প্রয়োগ করেন।

হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগের বিষয়টি সামনে আসার পর ইউক্রেন ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিশংসনযোগ্য অপরাধ করেছেন কি না, তা তদন্তে কমিটি করেছেন ডেমোক্র্যাটরা।

দ্বিতীয় হুইসেলব্লোয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফোনালাপকে ঘিরে দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছে আরও সরাসরি তথ্য রয়েছে। তবে আইনজীবী মার্ক একই ব্যক্তিকে উপস্থাপন করবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি।

এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি টুইটে লিখেছেন, তিনি অবাক হননি শুনে যে এখানে আরেকটি ‘গোপন সূত্র’ বেরিয়েছে। অভিশংসন তদন্তকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন।

হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, ফোনালাপের ট্রান্সক্রিপ্ট তারা উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
যদিও ডেমোক্র্যাটদের তদন্ত কমিটি এবং প্রথম হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগে বলা হয়েছে, বিতর্কিত অংশ বাদ দিয়ে ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করা হয়েছে। ফোনালাপ সম্পর্কিত আরও তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরকে সমন জারি করেছে কমিটি। গতকাল শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, তিনি সমনের ব্যাপারে সাড়া দেবেন। তবে অভিযোগ করেছেন, তাঁর কর্মীদের হেনস্তা করা হচ্ছে।

তবে অভিশংসনের তোড়জোড় থাকলেও বিষয়টি তত সহজ হবে না ডেমোক্র্যাটদের জন্য। ট্রাম্পকে অভিশংসন করার প্রস্তাব ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে পাস হলে তা সিনেটে অনুমোদনের জন্য উঠবে। সিনেটে ওই প্রস্তাব পাস হতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে। আর রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে তা পাস হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।