ট্রাম্প ৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের পছন্দের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন

প্রেসিডেনশিয়াল এয়ারক্রাফট এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
প্রেসিডেনশিয়াল এয়ারক্রাফট এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

গত সপ্তাহে বিচারপতি অ্যান্টনি কেনেডির অবসরগ্রহণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্টের গঠন সম্পূর্ণ বদলে দেওয়ার সুযোগ এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে। আগামী ৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি হিসেবে তিনি তাঁর মনোনীত ব্যক্তির নাম ঘোষণা করবেন। 

প্রেসিডেনশিয়াল এয়ারক্রাফট এয়ারফোর্স ওয়ানে চেপে ওয়াশিংটন থেকে নিউজার্সি যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

এই সুযোগে সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প এখন রক্ষণশীলদের পাল্লা ভারী করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁর এই মনোনীত ব্যক্তিকে সিনেট থেকে অনুমোদন পেতে হবে। সিনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।

ট্রাম্প বলেন, তিনি তাঁর পছন্দের তালিকাকে ছোট করে পাঁচজনের কথা ভাবছেন। এর মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন। ‘আমি যে পাঁচজনের কথা ভাবছি, তাঁদের সবাইকে আমি পছন্দ করি।’ সপ্তাহের শেষ দিকে বেডমিনস্টার গলফ ক্লাবে সময় কাটানোর সময় তিনি এই পাঁচজনের মধ্যে দু-একজনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন।

নয় সদস্যের মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে ৮১ বছরের কেনেডি ছিলেন দ্বিতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ বিচারক।

এই আদালত মার্কিন সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিতর্কিত বিভিন্ন আইনের চূড়ান্ত ফয়সালা দিয়েছেন এই আদালত। যার মধ্যে ছিল অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যকার বিরোধ মিটমাট এবং মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখার জন্য চূড়ান্ত আপিল।

বিচারপতি অ্যান্টনি কেনেডি। আগামী ৩১ জুলাই অবসরে যাবেন তিনি। ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি কয়েক বছরে এই আদালত ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটিতে সমকামীদের বিয়ে আইনসিদ্ধ করেছেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অভিবাসী আদেশ বন্ধ করেন এবং আপিল চলাকালে কার্বন নিঃসরণ কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিলম্বিত করেন।

রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের সাহায্যে ট্রাম্প ইতিমধ্যে ফেডারেল আদালতগুলোয় নিজের পছন্দমতো বিচারক নিয়োগের মাধ্যমে পুরো বিচারব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। গত সপ্তাহে বিচারপতি অ্যান্টনি কেনেডির অবসরগ্রহণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্টের গঠন সম্পূর্ণ বদলে দেওয়ার সুযোগও তাঁর সামনে হাজির। ওয়েব পত্রিকা হাফিংটন পোস্ট খোলামেলাভাবেই লিখেছে, গত সপ্তাহটা ছিল ট্রাম্পের জন্য সেরা সপ্তাহ, কিন্তু আমেরিকার জন্য সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহ।

ভাষ্যকারেরা বলছেন, কংগ্রেস ও রিপাবলিকান পার্টির ওপর ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণ এখন নিরঙ্কুশ। তিনি এদের সবার মতামত উপেক্ষা করে যা খুশি করতে পারেন। বিচার বিভাগ ক্ষমতার অপব্যবহার ঠেকাতে প্রহরীর দায়িত্ব পালন করবে—এমন আশা যাঁরা করেছিলেন, তাঁদের আশার প্রদীপও দ্রুত নিভে আসছে। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট ৫-৪ ভোটে মুসলিমপ্রধান দেশগুলো থেকে পর্যটকদের আগমন ঠেকাতে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ আইনসম্মত বলে রায় দিয়েছেন। তা থেকে স্পষ্ট, এই আদালত ট্রাম্পের বিরুদ্ধাচরণ করতে অনাগ্রহী।