Thank you for trying Sticky AMP!!

পৃথিবীকে সুরক্ষিত করতে বিশ্ব নেতাদের আলোচনায় বসতে হবে

জাতিসংঘে বক্তব্য রাখছেন মাসুদ বিন মোমেন

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘আগামী প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত করতে বিশ্বের রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই কার্যকর আলোচনায় বসতে হবে। কারণ পৃথিবী আমাদের ঠিক মায়ের মতোই লালন-পালন করছে।’
২২ এপ্রিল জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আয়োজিত ‘প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা’ বিষয়ক এক ইন্টারেক্টিভ ডায়ালগে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দূরদর্শী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়টিকে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিবেশ বিষয়ক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ এ ভূষিত হয়। যা পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ।
ইন্টারেক্টিভ এই প্যানেল আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য ছিল, ‘ধরিত্রী রক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শিক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়ন’।
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিশু এবং যুবদের মধ্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতনতা ও দক্ষতা সৃষ্টির পদক্ষেপসহ ধরিত্রী রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার যে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা পরবর্তী ধাপের পাঠ্যপুস্তক আমাদের সন্তানদের জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রচেষ্টা গ্রহণ বিষয়ক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছে।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ আরও বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তন রোধ বিষয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছি। তা হলো ক্ষতিকর প্লাস্টিক দ্রব্যের বদলে পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক তন্তু পাটজাত দ্রব্য ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আর এই সুযোগটি আমাদের রয়েছে কারণ বাংলাদেশ বিশ্বের বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী দেশ।’
শিক্ষার্থীদের বনায়ন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, দুর্যোগে পূর্ব-সতর্কতা ব্যবস্থা সমন্ধে কমিউনিটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণায় বিনিয়োগ সংক্রান্ত সরকারি পদক্ষেপে কথাও তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু সচেতন নাগরিক এবং প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তা সৃজনে সরকারের প্রতিশ্রুতির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের বিপদ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধিতে যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ প্রদান সংশ্লিষ্ট জাতীয় কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি দুর্যোগ মোকাবিলায় যুব সমাজের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এ ছাড়া বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ আইন প্রণয়ন করেছে মর্মে জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সবচেয়ে বেশি প্রতিবেশগত হুমকির মুখে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৈশ্বিক তাপমাত্রা এবং সমুদ্রের উচ্চতা আরও বাড়লে বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল সমুদ্রের পানিতে নিমজ্জিত হবে। যা এই শতাব্দীর শেষে প্রায় ৪০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে।
‘টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে একমাত্র এজেন্ডা যার বাস্তবায়নে জলবায়ু পরিবর্তনের এই হুমকি মোকাবিলা করা যেতে পারে’ মর্মে উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি সবার মঙ্গলে প্রকৃতির সঙ্গে মানবজাতির বহুমুখী ও সংবেদনশীল সম্পর্ককে মর্যাদা দিয়ে ধরিত্রী রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।