Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের যোগদান

আন্তসংসদীয় ইউনিয়নের শুনানিতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান আ ফ ম রুহুল হক

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো আন্তসংসদীয় ইউনিয়নের (আইপিইউ) বার্ষিক সংসদীয় শুনানি। এবারের শুনানিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ ডা. আ ফ ম রুহুল হকের নেতৃত্বে চার সাংসদ যোগ দেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেন ডা. মো আফসারুল আমিন, মো. আবু জহির, বেনজীর আহমেদ ও আহসান আদেলুর রহমান।
সাতটি পর্বে ভাগ করে সংসদীয় শুনানির দুদিনের এ আলোচনাকে এগিয়ে নেওয়া হয়। পর্বগুলো ছিল: ১) ক্রসরোডে বহুপাক্ষিকতা: সামগ্রিক মূল্যায়ন ও উদ্ভূত হুমকিসমূহ, ২) জাতীয় ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিকতা: ভালো রাজনীতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, ৩) জাতিসংঘ ও এর বাইরে লিঙ্গসমতা, ৪) বহুপাক্ষিকতাবাদে বিনিয়োগ: জাতিসংঘের তহবিল ঘাটতি, ৫) অধিক সাড়াদানে সক্ষম বিশ্ব ব্যবস্থা অভিমুখে: সাধারণ পরিষদকে চাঙাকরণ, ৬) সংঘাত প্রতিরোধ, সংঘাতের অবসান ও শান্তিরক্ষাকে অধিকতর কার্যকর করা ও ৭) জনগণের চোখে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা: গণযোগাযোগের প্রভাব।
পর্বগুলোতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাংলাদেশকে বহু ভাষাভাষী, বহু সংস্কৃতির ও বহু ধর্মের একটি দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁরা বহু পক্ষবাদ এবং বহুভাষিক সংস্কৃতির চর্চা ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের গৃহীত সময়োপযোগী পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরেন। উঠে আসে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের স্বতন্ত্র পরিচয়, ভাষা, সংস্কৃতি, ভূমি ও সম্পদ সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি সমেত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি ও তা বাস্তবায়নের কথা।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা রুহুল হক ‘ক্রসরোডে বহুপাক্ষিকতাবাদ: সামগ্রিক মূল্যায়ন ও উদ্ভূত হুমকিসমূহ’ শীর্ষক পর্বে বক্তব্য দেন। তাতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি নিয়ম-ভিত্তিক বহু পাক্ষিক ব্যবস্থার প্রবক্তা। এই ব্যবস্থা জাতিসমূহের সার্বভৌমিক সমতাকে সব সময়ই সমুন্নত রাখে এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ সমর্থন করে না। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুসৃত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি -‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ থেকে বাংলাদেশ এই বহু পাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অনুপ্রাণিত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বহুপাক্ষিকতা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ”।
জাতিসংঘসহ বিদ্যমান অন্যান্য বহু পাক্ষিক ব্যবস্থার কারণেই সংঘাত, দ্বন্দ্ব ও যুদ্ধের বিভীষিকা পেরিয়ে বিশ্বে শান্তি, সহযোগিতা, মানবিক মূল্যবোধ ও স্বাধীনতা সমুন্নত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সাংসদ রুহুল হক। তিনি বহুপাক্ষিকতার সফলতার ক্ষেত্রে বেশ কিছু হুমকির কথা উল্লেখ করেন। এগুলো হলো: আদর্শ বিচ্যুত রাজনীতি, রাজনৈতিক তহবিলের ঘাটতি, ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, এসডিজি ও শান্তিরক্ষাসহ প্রধান বহু পাক্ষিক অ্যাজেন্ডাসমূহের বাস্তবায়নে সম্পদের ঘাটতি এবং অভিবাসনের বৈশ্বিক কমপ্যাক্ট ও জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে সহায়তার অভাব।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও অরক্ষিত দেশ, জাতি ও জনগোষ্ঠীসমূহকে সুরক্ষিত করতে বহুপাক্ষিকতাবাদের এ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই বিশ্বসভাকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা ডা. রুহুল হ।
আইপিইউর উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটেরেজ। এ ছাড়া উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য দেন ৭৩তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মারিয়া ফার্নান্দে এসপিনোসা গার্সেজ ও আইপিইউর প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েলা কুইভাস ব্যারন ।
আইপিইউর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান।