Thank you for trying Sticky AMP!!

বাইডেনের শপথ, প্রত্যাশা নতুন দিনের

শপথ নিচ্ছেন জো বাইডেন

বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে প্রধান বিচারপতি তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশটির ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। নানা প্রেক্ষাপটে নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে নতুন দিনের প্রত্যাশা থাকবে সবার।


ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের ওয়েস্ট ফ্রন্টে আয়োজন করা হয় শপথ অনুষ্ঠানের। নিজের পরিবারের ১২৭ বছরের পুরোনো বাইবেলের একটি কপি হাতে শপথবাক্য পাঠ করেন বাইডেন।

মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানানো হয়, পূর্বঘোষণা মতোই এই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৮৬৯ সালে অ্যান্ড্রু জনসনের পর থেকে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর উত্তরসূরির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকলেন। তবে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অন্যদের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ ও হিলারি ক্লিনটন। সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ জিমি কার্টার (৯৬) ও সাবেক ফার্স্ট লেডি রোজালিন কার্টার অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। তাঁরা বিষয়টি আগেই জানিয়ে দিয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে তাঁদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। আরও উপস্থিত ছিলেন সামরিক, বেসামরিক শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তারা।


বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন করেন সংগীত তারকা লেডি গাগা। এ সময় উপস্থিত সবাই বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে একাত্ম হন। এরপর প্রথা অনুযায়ী প্রথমে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পথ নেন কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান ও প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসেবে এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন কমলা। তাঁকে শপথ পড়ান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র। শপথ শেষ হওয়ার পর তুমুল করতালি দিয়ে কমলাকে অভিনন্দন জানান সবাই।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন কমলা হ্যারিস

কমলা হ্যারিসের শপথের পর সংগীত পরিবেশন করেন জেনিফার লোপেজ। এরপর শপথ গ্রহণ করে জো বাইডেন। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে শপথ পড়ানো হয় বাইডেনকে। বাইবেলে হাত রেখে শপথ বাক্য পাঠ করেন বাইডেন। তাঁকে শপথ পড়ান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। শপথের পর তুমুল করতালি ও হর্ষধ্বনিতে অভিনন্দন জানানো হয় বাইডেনকে।

বাইডেনের শপথের পর বক্তব্য দেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
শপথ নেওয়ার আগে বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনের দিনটা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অতিথিশালা ব্লেয়ার হাউস থেকে। আজ সকালে বাইডেন প্রথমে যান ক্যাথেড্রাল অব সেন্ট ম্যাথিউ দ্য অ্যাপোস্টল গির্জায়। সেখানে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারা। প্রার্থনার পর বাইডেন এক টুইটে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে নতুন এক দিনের সূচনা।’

ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে শপথ নিলেন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পূর্বসূরির কাছ থেকে এমন দেশ পাননি, যেমনটা ট্রাম্পের কাছ থেকে পেলেন বাইডেন। এই মুহূর্তে করোনা মহামারির সংক্রমণ ও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের সম্ভাব্য সহিংস আচরণের আশঙ্কায় লকডাউনে রয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি। করোনায় ইতিমধ্যে কেড়ে নিয়েছে চার লাখের বেশি মার্কিনের প্রাণ। আর ট্রাম্পের ‘উসকানিতে’ ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবনে হামলা চালান তাঁর উগ্র সমর্থকেরা। এতে পাঁচজন নিহত হন, আহত হন কয়েক শ। বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের মতো করে জনগণের মধ্যে বিভেদের দেয়াল গড়ে বিদায় নেননি কোনো প্রেসিডেন্ট। শুধু দেশে নয়, বহির্বিশ্বেও মার্কিন প্রভাব ক্ষয়িষ্ণু করেছেন ট্রাম্প। এ সব বিষয়ই বড় চ্যালেঞ্জ হবে বাইডেনের জন্য। এসব চ্যালেঞ্জ জয় করে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দিন আনবেন, সেই প্রত্যাশা থাকবে সবার।


এর আগে স্থানীয় সময় বুধবার সকালেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যান ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার মেরিন ওয়ান ট্রাম্প ও মেলানিয়াকে উড়িয়ে নিয়ে যায় ম্যারিল্যান্ডের সামরিক ঘাঁটি জয়েন্ট বেইজ অ্যান্ড্রুজে। সেখানে দুজনেই বিদায়ী ভাষণ দেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে তাঁরা ফ্লোরিডার পাম বিচে চলে যান। সেখানে নিজস্ব রিসোর্টে পরবর্তী জীবন শুরু করছেন ট্রাম্প।