
করোনার বিপজ্জনক নতুন ধরন অমিক্রনকে বর্তমানে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন জি-৭–এর নেতারা। উন্নত সাত অর্থনীতির দেশগুলোর সমন্বয়ে গড়া এ জোটের নেতারা গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন। আর জাতিসংঘ বলছে, সমন্বয়হীন পদক্ষেপে মহামারি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
এদিকে বিশ্বজুড়ে করোনার টিকার বৈষম্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। অনেকটা তাঁর সুরেই কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জি–৭ নেতারা বলেছেন, অমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার অর্থ, এখন দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করা আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
জি-৭-এর বর্তমান সভাপতি যুক্তরাজ্য। বিবৃতিতে জোটের নেতারা আরও বলেন, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে তাঁরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জোটের মন্ত্রীরা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন, নতুন পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখা উচিত।
বিবৃতিতে বলা হয়, এখন দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা ও পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার পাশাপাশি দরকার তথ্যের বিনিময়।
জাতিসংঘ বলছে, সমন্বয়হীন পদক্ষেপের মাধ্যমে মহামারি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। বিশ্ব সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার বলেন, কোনো মহামারি অসামঞ্জস্যপূর্ণ উপায়ে ঠেকানো যায় না। ভবিষ্যতে সবাইকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, সবাইকে এমনভাবে এগোতে হবে, যেন চলতি বছরের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসে। নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
গুতেরেস আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ২০২২ সালের প্রথমার্ধে বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে। সে অনুযায়ী সবাইকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিশ্বের ৯৮টি দেশ এখনো টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। এর মধ্যে জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষকেও টিকার আওতায় আনতে পারেনি ৪০টি দেশ। নিম্ন আয়ের দেশগুলো জনসংখ্যার ৪ শতাংশের কম মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে।
টিকাবৈষম্য করোনার নতুন নতুন ধরনকে ভয়ানক হয়ে উঠতে ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, এর ফলে বিশ্বের প্রতিটি কোণে মানুষের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি ধ্বংস হচ্ছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার অমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়। অমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার তথ্য গত ২৪ নভেম্বর ডব্লিউএইচওকে অবহিত করে দেশটি। এরপর থেকে দ্রুতই দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ধরনটি।
যাঁরা করোনার টিকা নেননি, আগামী শীত মৌসুম তাঁদের জন্য গুরুতর অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। শীতে করোনার ভয়াবহতা নিয়ে বৃহস্পতিবার সবাইকে সতর্ক করে তিনি বলেন, সত্যিকারের সুরক্ষা পেতে টিকা নিন।
একই সময়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপের চেয়ে টিকার ওপর জোর দিচ্ছে।