এখন আর পয়সার দাম নেই—এ কথা মিথ্যা প্রমাণ করেছেন মুদ্রা সংগ্রাহকেরা। না হলে মাত্র তিনটি এক সেন্টের মুদ্রা কি আর ৮ লাখ ডলারে বিক্রি হয়!
ঘটনাটি ঘটেছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রে। অথচ ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এক সেন্ট মুদ্রা তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের যুক্তি, এখন মানুষ নগদ অর্থ ব্যবহার করে না, লেনদেন হয় অনলাইনে, অ্যাপ বা প্লাস্টিকের কার্ড ব্যবহার করে। তাই মুদ্রা, বিশেষ করে সেন্টের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। তা ছাড়া এক সেন্ট তৈরি করতে খরচ কয়েক গুণ বেশি হয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের ধাতব মুদ্রাশালা আর এক সেন্ট তৈরি করছে না। ফিলাডেলফিয়ায় ইউএস মিন্টে সর্বশেষ এক
সেন্ট তৈরি হয় চলতি বছরের ১২ নভেম্বর। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় ধাতব এক সেন্টের ২৩২ বছরের পথচলা।
তবে যেখানে পথচলা শেষ, সেখান থেকেই শুরু হয়েছে এক সেন্টের অভূতপূর্ব এক যাত্রার। ইউএস মিন্টের তৈরি করা ২৩২তম সেটের শেষ তিনটি এক সেন্টের মুদ্রা গত বৃহস্পতিবার নিলামে ৮ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে। যে তিনটি ছাঁচে ওই মুদ্রা তিনটি তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলোও শেষ তিন মুদ্রার ক্রেতাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত নিলাম সংস্থা ‘স্ট্যাকস বাওয়ার্স গ্যালারিজ’ ওই নিলামের আয়োজন করে। সেখানে মোট ২৩২ সেট এক সেন্ট মুদ্রা বিক্রি হয়। প্রতি সেটে তিনটি করে এক সেন্টের মুদ্রা ছিল। সেগুলোর মোট দাম উঠেছে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। সবচেয়ে বেশি ৮ লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে ২৩২তম সেটটি।
প্রতিটি সেটে একটি ফিলাডেলফিয়া মিন্টে তৈরি ১টি এক সেন্ট, ডেনভার মিন্টে তৈরি ১টি এক সেন্ট এবং ২৪ ক্যারেট সোনার তৈরি একটি বিশেষ এক সেন্ট। প্রতিটি মুদ্রায় একটি বিশেষ ‘ওমেগা’ প্রতীক ছিল, যা একটি সময়ের সমাপ্তি নির্দেশ করে।
নিলাম হাউসের কর্মকর্তা জন ক্রালজেভিচ বলেন, এ ধরনের পণ্যের বেলায় সঠিক বাজারমূল্য আগে থেকে অনুমান করা খুব কঠিন।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমি ৪০ বছর ধরে মুদ্রার নিলাম করে আসছি। আমি বলতে পারি, আগে কখনো এমন কিছু দেখিনি। কারণ, এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।’ যুক্তরাষ্ট্রে এক সেন্ট তৈরি শুরু হয় ১৭৯৩ সালে।