যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা

ওবামার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে কেন ক্ষোভ ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি বারাক ওবামার নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, তিনি ‘কিছুই না করে’ এই পুরস্কার পেয়েছেন। ট্রাম্প এও অভিযোগ করেন, তিনি ‘আমাদের দেশ ধ্বংস’ করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ‘আটটি যুদ্ধ’ শেষ করার ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি কোনো পুরস্কারের জন্য এই কাজ করেননি।

অনেকে বলছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এসব বলছেন। পুরস্কার ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ওবামা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি কিছুই না করার জন্য’ এটা পেয়েছিলেন। ওবামা একটি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি নিজেও জানতেন না, কিসের জন্য (পুরস্কার পেয়েছিলেন)। তিনি শুধু নির্বাচিত হয়েছিলেন, আর তারা ওবামাকে ‘কিছুই না করার জন্য’ পুরস্কারটি দিয়ে দেয়। তিনি দেশ ধ্বংস করা ছাড়া আর কিছুই করেননি।

২০০৯ সালে যখন ওবামা এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পেয়েছিলেন, তখন তাঁর প্রথম মেয়াদের মাত্র আট মাস চলছিল। এই ঘটনা অনেককে অবাক করেছিল। এমনকি উদারপন্থী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসও এই স্বীকৃতিকে ‘খুবই অপরিপক্ব’ বলে উল্লেখ করেছিল। এই প্রভাবশালী পত্রিকাটি মন্তব্য করেছিল, নোবেলের ‘মান আরও উঁচু হওয়া উচিত’।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দেশ ধ্বংস করা ছাড়া আর কোনো কিছুর জন্য তারা ওবামাকে পুরস্কারটি দেয়নি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি আটটি যুদ্ধ থামিয়েছি, যা আগে কখনো ঘটেনি। তবে তারা (নোবেল কমিটি) যা করার তা–ই করবে। তারা যা-ই করুক, ঠিক আছে। আমি এটা জানি, আমি পুরস্কারের জন্য এসব করিনি। আমি এটা করেছি; কারণ, আমি অনেক জীবন বাঁচিয়েছি।’

নরওয়ের রাজধানী অসলোতে আজ শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হচ্ছে। জানুয়ারিতে ট্রাম্প ওভাল অফিসে ফিরে আসার পর থেকে নরওয়ের পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলোকে প্রভাবিত করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রার্থীদের পর্যালোচনা করতে নোবেল কমিটিকে সহায়তা করে।

ট্রাম্প বিভিন্ন ঘটনা ও অর্জনের জন্য কৃতিত্ব নিচ্ছিলেন এবং প্রায়শই তাঁর ব্যক্তিগত প্রভাবকে বাড়িয়ে বলছিলেন। গত মাসে জাতিসংঘের ভাষণে তিনি নিজেকে প্রায় নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যোগ্য বলেই তুলে ধরেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি ‘অসম্ভব এমন সাতটি যুদ্ধ’ থামিয়েছেন।

যদিও ট্রাম্প দীর্ঘদিনের কিছু শত্রুর মধ্যে শান্তি আনতে অবশ্যই অবদান রেখেছেন। তবে তিনি অন্যান্য যেসব সংঘাত শেষ করার কৃতিত্ব দাবি করেছেন, সেগুলোর কয়েকটিতে যুদ্ধবিরতি স্থাপনে তাঁর ভূমিকা নিয়ে জড়িত দেশগুলোই প্রশ্ন তুলেছে।