রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগমুহূর্তে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, পুতিন যদি যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হন, তাহলে রাশিয়াকে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।
আজ শুক্রবার সকালে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে আলাস্কায় যাওয়ার পথে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল আটটার কিছুক্ষণ আগে সফরসঙ্গীদের নিয়ে উড়োজাহাজে চড়েন তিনি।
আলাস্কার সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায়) ট্রাম্প ও পুতিনের বহুল আলোচিত এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনিভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দমতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।
ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে আলাস্কায় অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকটি অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা চলবে বলে ক্রেমলিন আশা করছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল ওয়ানকে বলেন, ‘আপনি ধরে নিতে পারেন যে এটি (বৈঠক) ন্যূনতম ছয় থেকে সাত ঘণ্টা চলবে।’ তিনি আরও বলেন, বৈঠকটি ‘ফলপ্রসূ’ হবে বলে মস্কো প্রত্যাশা করে। এএফপি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য আলাস্কার উদ্দেশে উড্ডয়নের আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রুশ–মার্কিন সহযোগিতা স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে ফুল দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বিমানের ডানার সামনে করমর্দনরত সোভিয়েত ও মার্কিন বৈমানিকদের প্রতিকৃতি–সংবলিত এই ভাস্কর্য ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে প্রায় আট হাজার মার্কিন লেন্ড-লিজ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত ফ্রন্টে পৌঁছে দেওয়া আলাস্কা–সাইবেরিয়া আকাশপথকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
আলাস্কার ফেয়ারব্যাঙ্কসেও এমন একটি স্মৃতিসৌধ রয়েছে, যেটি একসময় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় সজ্জিত ছিল। ২০২২ সালের পর থেকে সেখানে শুধু আমেরিকার পতাকা রয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিকেরা বলেছেন, সেখানে আবার রাশিয়ার পতাকা ফিরিয়ে আনা হলে এর খুবই প্রতীকী তাৎপর্য থাকবে। রাশিয়া মূলত এটাই ট্রাম্প ও পুতিনের এ বৈঠক থেকে চায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবারও একটি বড় শক্তি হিসেবে রাশিয়ার স্বীকৃতিই মস্কোর চাওয়া।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের মাধ্যমে পুতিন যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, তা খুবই স্পষ্ট। এর মধ্য দিয়ে কার্যত মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বৈরিতা নয়, মিত্র হিসেবে ভূমিকা রাখার দিনগুলো স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠক হবে একটি সামরিক ঘাঁটিতে। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত ‘জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’-কে এ বৈঠকের স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত একটায়) বৈঠকটি শুরু হওয়ার কথা।
‘জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’ আলাস্কার সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের হামলার আশঙ্কা মোকাবিলায় আকাশ প্রতিরক্ষা কেন্দ্র ও কেন্দ্রীয় কমান্ড পয়েন্ট হিসেবে ঘাঁটিটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাজনিত শর্তাবলি পূরণ হওয়ায় এ ঘাঁটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২০১৯ সালে ঘাঁটিটি পরিদর্শন করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, এখানকার সেনারা ‘আমাদের দেশের শেষ সীমানায় আমেরিকার প্রতিরক্ষার সম্মুখভাগে’ দায়িত্ব পালন করছেন।
৬৪ হাজার একর আয়তনের এই ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর আর্কটিক অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে একটি প্রধান কেন্দ্র। ১৯৫৭ সালে ঘাঁটিটি সবচেয়ে বেশি সক্রিয় অবস্থায় ছিল। সে সময় এখানে ২০০টি যুদ্ধবিমান, একাধিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র ও সতর্কীকরণের জন্য রাডার সিস্টেম মোতায়েন ছিল।
সূত্র: বিবিসি
দ্রুত রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি দেখতে চান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আজই এটা না হলে তিনি খুশি হতে পারবেন না।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির সঙ্গে বৈঠকের জন্য আলাস্কায় আসার পথে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। সেই আলাপচারিতার পর অনলাইনে পোস্ট করা একটি ক্লিপে এ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আজকের বৈঠকের সফলতা হিসেবে তিনি কিসের কথা ভাবছেন, সেই প্রশ্নের এ জবাব দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আপনাকে এখনই সেটা বলতে পারব না। আমি জানি না, এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আমি কিছু বিষয় চাই। আমি যুদ্ধবিরতি দেখতে চাই।’
কী করতে হবে, সে বিষয়ে ইউরোপ তাঁকে বলে দিচ্ছে না জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তবে এ প্রক্রিয়ায় তারা অবশ্যই যুক্ত হতে যাচ্ছে। জেলেনস্কিও থাকবেন। কিন্তু আমি দ্রুত একটি যুদ্ধবিরতি দেখতে চাই।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আজই এটা (যুদ্ধবিরতি) হতে যাচ্ছে কি না, তা আমি জানি না। কিন্তু আজ এটা না হলে আমি খুশি হচ্ছি না। প্রত্যেকে বলেছিল, আজ এটা (যুদ্ধবিরতি) হতে পারে না, কিন্তু আমি শুধু বলছি, আমি চাই হত্যাকাণ্ড বন্ধ হোক।’
হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য আলোচনায় এসেছেন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা কোনো টাকা খরচ করছি না। আমরা টাকা উপার্জন করছি। তাঁরা আমাদের কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে, আমরা সেগুলো ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো আমাদের বড় ও আকর্ষণীয় চেক পাঠাচ্ছে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কিন্তু তাতে আমার কিছু আসে–যায় না।…আমি যা নিয়ে চিন্তিত, সেটা হলো গত সপ্তাহে তারা ৭ হাজার ১১ জনকে হারিয়েছে, যাঁদের প্রায় সবাই সৈনিক। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে একটি শহরে ৩৬ জন মারা গেছেন। সাত হাজারের বেশি বেশি সেনা! এটা পাগলামো।’
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে বৈঠকের জন্য আলাস্কায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১১টার আগে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২৬ মিনিটে) মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ান আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর প্রায় আধা ঘণ্টা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বহনকারী বিমান অবতরণ করে।
দুই প্রেসিডেন্টই একই সময় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার পর) বিমান থেকে অবতরণ করেন। তাঁরা দুজনই লালগালিচা দিয়ে হেঁটে পরস্পরের কাছে এসে করমর্দন করেন।
আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা) তাঁদের এই বৈঠক শুরু হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এটাই তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎও এটাই প্রথম।
সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধই এই সাক্ষাতের প্রধান লক্ষ্য। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রাশিয়াবিষয়ক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ অংশ নিয়েছেন। অপর পক্ষে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং রুশ প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটির টারমাকে ট্রাম্প ও পুতিনের জন্য আলাদা দুটি গাড়ি অপেক্ষা করছিল। পুতিনের জন্য রাশিয়ার নিজস্ব কোম্পানির তৈরি ‘অরাস’ লিমোজিন। ট্রাম্পের গাড়ি ‘দ্য বিস্ট’। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যবহারের গাড়ি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লালগালিচায় করমর্দন, সৌজন্য কথাবার্তা, শুভেচ্ছা বিনিময় ও ছবি তোলার পর ট্রাম্প ও পুতিন গাড়িতে ওঠার জন্য যাচ্ছিলেন। এ সময় ট্রাম্প নিজের গাড়িতে ওঠার জন্য আহ্বান করেন। পুতিন ইতিবাচক ইশারা দেন এবং ঘুরে গিয়ে বাঁ দিকে ট্রাম্পের গাড়িতে ওঠেন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকস্থলে যেতে যেতে পুতিন অপেক্ষমাণ সাংবাদিক ও অন্য কর্মকর্তাদের দিকে হাসিমুখে হাত নাড়েন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক চলছে। এতে ট্রাম্প-পুতিন ও দুই পক্ষের দুজন দোভাষী ছাড়া আরও দুজন করে কর্মকর্তা বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। উড়োজাহাজ থেকে নেমে এলমেনডর্ফ– রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটির বৈঠকস্থলে যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠার সময় সাংবাদিকেরা পুতিনকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। কিন্তু পুতিন উত্তর না দিয়েই গাড়িতে উঠে যান।
বিবিসি জানায়, একটি প্রশ্ন ছিল, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন, আপনি কি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন?’
আরেকজন জানতে চেয়েছেন, ‘ট্রাম্প আপনাকে কী বার্তা দিয়েছেন?’
এই দুই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ট্রাম্প ও পুতিন এগিয়ে যাওয়ার সময় আরেকজন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কি সাধারণ মানুষ হত্যা বন্ধ করবেন?’ পুতিনের ভঙ্গি দেখে মনে হয়েছে, তিনি প্রশ্নটি শোনেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক ঘণ্টা আগে আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটির টারমাকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। দুজনই হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। তাঁরা পরস্পরের কাঁধে হাত রেখে আন্তরিকতা প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন, তখন তাঁকে পুতিনের মতো এতটা উষ্ণভাবে গ্রহণ করা হয়নি।
পুতিনকে বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে গ্রহণ করার জন্য উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং ট্রাম্প। কিন্তু জেলেনস্কির বেলায় এসব কিছুই হয়নি। বরং আলোচনার এক পর্যায়ে ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ফলে মাঝপথেই আলোচনা শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এ ছাড়া পুতিনকে নিজের গাড়িতে ডেকে নিয়েছেন ট্রাম্প। দুই শক্তিধর দেশের প্রেসিডেন্টের একই গাড়িতে ওঠার এমন ঘটনা বেশ বিরল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ইতিমধ্যে তৃতীয় ঘণ্টায় প্রবেশ করেছে। এর অর্থ হচ্ছে, ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে বৈঠক সম্ভবত ভালোভাবে এগোচ্ছে।
আলাস্কার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা) শুরু হওয়া বৈঠকের বিরতিতে তাঁদের মধ্যাহ্নভোজে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখনো তা হয়নি।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প বলেছিলেন, বৈঠকের দু–তিন মিনিটের মধ্যে তিনি পুতিনের মনোভাব বুঝতে পারবেন। যদি মনে হয়, আলোচনা প্রত্যাশিত দিকে এগোচ্ছে না, তাহলে তিনি বৈঠক থেকে বের হয়ে যাবেন।
কিন্তু তৃতীয় ঘণ্টায় বৈঠক গড়ালেও ট্রাম্প বের হননি।
সাড়ে তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এই বৈঠক থেকে অগ্রগতি আসতে পারে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার পথে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, তিনি দ্রুত রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চান। তাঁর চাওয়া, এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ হোক।
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রয়েছেন। অপর পক্ষে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং রুশ প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ রয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার রুদ্ধদ্বার বৈঠক প্রায় তিন ঘণ্টা পর শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। দুই নেতা শিগগির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা) এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে ট্রাম্প–পুতিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে রাশিয়ার মন্ত্রীরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রাশিয়াবিষয়ক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ অংশ নেন। অপর পক্ষে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও রুশ প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বৈঠকে ছিলেন। সঙ্গে দুই পক্ষে দুজন দোভাষী ছিলেন।
পরবর্তী দফার বৈঠকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভও অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য এই যুদ্ধের ‘মূল কারণগুলো’ নিরসন করতে হবে। শুক্রবার আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন তিনি।
বৈঠকে তাঁদের আলোচনার কেন্দ্রে ইউক্রেন সংঘাত ছিল জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একটি স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য আমাদের এই সংঘাতের মূল কারণগুলো নিরসন করতে হবে।’ তবে মূল কারণগুলো বলতে কী বোঝাচ্ছেন, তার বিস্তারিত উল্লেখ করেননি তিনি।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয়রা শান্তিপ্রক্রিয়ায় বাধা না দেওয়ার পথ বেছে নেবেন বলে আশা করছেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘শুভকামনার স্বর প্রকাশের জন্য আমি ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, উভয় পক্ষকেই ফলাফলকেন্দ্রিক হওয়া উচিত।
পুতিন আরও বলেন, ‘ট্রাম্প স্পষ্টত তাঁর দেশের সমৃদ্ধির বিষয়ে মনোযোগী। তবে তিনি এটাও বুঝেছেন, রাশিয়ারও নিজের স্বার্থ রয়েছে।’
ট্রাম্পকে ‘প্রতিবেশী’ বলে সম্ভাষণ
যৌথ সংবাদ সম্মেলেনে প্রথমে কথা বলেন পুতিন। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মহাসাগর দ্বারা আলাদা হলেও তারা খুব কাছের প্রতিবেশী। পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবধান মাত্র চার কিলোমিটারের (এখানে আলাস্কার ছোট কোনো দ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার নিটকতম জলসীমার কথা বোঝানো হয়েছে)। আমরা অত্যন্ত কাছের প্রতিবেশী। এটিই বাস্তবতা।’
এ কারণে আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটির টারমাকে দুজনের মধ্যে করমর্দনের সময় ট্রাম্পকে ‘হ্যালো, প্রতিবেশী’ বলে সম্বোধন করেছেন বলেও জানান পুতিন।
প্রাথমিক এসব কথার পর সংবাদ সম্মেলেন পুতিন আলাস্কার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আলাস্কা একসময় রাশিয়ার অংশ ছিল, যা ১৮০০ দশকের মাঝামাঝি সময় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করা হয়।
পুতিন আরও বলেন, আলাস্কায় এখনো রাশিয়ান ‘অর্থোডক্স চার্চ’ রয়েছে। তিনি মনে করেন, এই ঐতিহ্য পরস্পরের জন্য উপকারী এবং ন্যায্য সম্পর্ক পুনর্নির্মাণে সাহায্য করতে পারে।
এরপর পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পটভূমি তুলে ধরেন। তাঁর দেশ কেন এই সংঘাতে জড়িয়েছে, সেই যুক্তিও উপস্থাপন করেন।
সূত্র: বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যৌথ সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা প্রতি সপ্তাহে হাজারো মানুষের নিহত হওয়া বন্ধ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনও এমনটি দেখার জন্য আমার মতোই আগ্রহী।’
যৌথ সংবাদ সম্মেলন শেষে পুতিনকে ধন্যবাদ দেন ট্রাম্প এবং তাঁকে ‘ভ্লাদিমির’ বলে সম্বোধন করেন তিনি।
এরপর ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা খুব শিগগির আপনার সঙ্গে আবারও কথা বলব। সম্ভবত আপনার সঙ্গে শিগগির আবার দেখা হবে।’
তখন পুতিন ইংরেজিতে বলেন, ‘পরবর্তীবার মস্কোতে।’
সূত্র: বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে আলাস্কা ছাড়ছেন। পুতিন এরই মধ্যে তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজে উঠে গেছেন। পুতিনের মিনিট দশেক পর ট্রাম্পও তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজে উঠে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই উড়োজাহাজ দুটি নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আলাস্কার এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে পুতিনকে বহনকারী উড়োজাহাজ অবতরণ করেন। এর কয়েক মিনিট আগে ট্রাম্পকে বহনকারী উড়োজাহাজও সেখানে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে পুতিনকে লালগালিচায় উষ্ণভাবে বরণ করে নেন ট্রাম্প। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের গাড়িতে করে দুই নেতা বৈঠকস্থলে যান। সেখানে তাঁদের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠক হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষের আরও দুজন করে কর্মকর্তা ছিলেন।
রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে ট্রাম্প ও পুতিন যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন। তাঁরা বৈঠক ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি বা এ যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি।
তবে ট্রাম্প ও পুতিন শিগগির আবার দেখা করতে পারেন, এমন একটি ইঙ্গিতের মধ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ হয়। তাঁদের পরবর্তী বৈঠক হতে পারে মস্কোয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মূল্যায়ন করতে বললে ট্রাম্প জবাব দেন, ‘১০–এ ১০।’ তিনি বলেন, ‘আলোচনায় আমাদের মধ্যে দারুণ মিল ছিল।’ আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে বলে জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, এখন ইউরোপের দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করে একটি চূড়ান্ত চুক্তি করার দায়িত্ব জেলেনস্কির (ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট)।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, ভবিষ্যতে রাশিয়া ও ইউক্রেন সরাসরি আলোচনায় বসবে। সেই আলোচনায় পুতিন ও জেলেনস্কি—দুজনেই থাকবেন। খবর বিবিসির
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি শিগগিরই হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এতে যুদ্ধবন্দীদের বিনিময়ের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে একটি বিষয়ে একমতে পৌঁছানো যায়নি। আর সে কারণেই চুক্তি হয়নি। তবে বিষয়টি কী, তা বলেননি ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় স্থানীয় সময় শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ট্রাম্প।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলব ৫০-৫০। কারণ, অনেক কিছুই ঘটতে পারে। তবে আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট পুতিন সমস্যার সমাধান চান।’
ট্রাম্প দাবি করেন, যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ আমাকে তাঁরা হাজার হাজার মানুষের একটি তালিকা দিয়েছেন—হাজার হাজার যুদ্ধবন্দী, যাঁরা মুক্তি পাবেন।’
ফক্স নিউজের সঞ্চালক হ্যানিটি এ সময় জানতে চান, এমন কোনো চুক্তির বিষয়ে আজকের বৈঠকে তাঁরা সম্মত হয়েছেন কি না? জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিষয়টি এখনো ঝুলে আছে।’ তাঁর ভাষায়, ‘আসলে তাঁদের এ প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবে।’
তবে কে তাঁকে যুদ্ধবন্দীদের তালিকা দিয়েছেন, কিংবা এসব বন্দীরা রাশিয়া নাকি ইউক্রেনের নাগরিক, সেসব বিষয়ে কিছুই বলেননি ট্রাম্প।
চুক্তিতে বাধা কী, বলেননি ট্রাম্প
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প চুক্তিতে পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করেছে যেসব বিষয়, সেগুলোর কথা বলতে নাজি হননি।
পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি চান চুক্তি সম্পন্ন হোক।’ তবে একটি বড় বিষয়ে তাঁরা একমত হতে পারেননি। সেই বিষয়টি কী, তা বিস্তারিত বলেননি ট্রাম্প।
ট্রাম্প জানান, পুতিন এমনও বলেছেন, ইউক্রেনে হামলা চালানোর সময় যদি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকতেন, তাহলে এই যুদ্ধ হতো না। এ ব্যাপারে পুতিন একমত হওয়ায় ট্রাম্প তাঁর প্রশংসা করেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ কখনো হওয়া উচিত ছিল না। জানেন, অনেক যুদ্ধই হওয়া উচিত ছিল না। ভুল লোকেরা কথা বলছে এবং এ ধরনের বোকামিগুলো ঘটছে।’ তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে রাশিয়ায় হামলা ঠেকাতে না পারার জন্য দোষারোপ করেন।
সঞ্চালক হ্যানিটি জিজ্ঞাসা করেন, এটি কি আজ চূড়ান্ত হওয়া কোনো চুক্তি? এ সময় ট্রাম্প বলেন, এটি এখনো মুলতবি রয়েছে।
তবে ট্রাম্প এ–ও বলেন, তাদের (রাশিয়া) এটা মেনে নিতে হবে। খবর বিবিসির
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ‘খুবই ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে।
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুই নেতার ওই বৈঠকের পর প্রতিক্রিয়ায় এমন কথা বলেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
পেসকভ বলেন, আলাস্কায় দুই নেতার বৈঠক ‘খুবই ইতিবাচক’ হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে পেতে এ আলোচনা উভয় দেশকে ‘আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে’ সহায়তা করবে।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ট্রাম্প ও পুতিন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্ন না নেওয়া প্রসঙ্গে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরইএ নভোস্তিকে পেসকভ বলেন, দুই নেতা ‘পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য’ দিয়েছেন। এ কারণে অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরের প্রয়োজন পড়েনি। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন আলাস্কায় যান, তখন তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গ সামনে এনে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমকে একহাত নিয়েছেন। খবর আল–জাজিরার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে মারিয়া লেখেন, ‘পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে, যাকে উন্মাদনা বলা যায়, প্রায় পাগলামির কাছাকাছি। টানা তিন বছর তারা রাশিয়ার একঘরে হয়ে পড়া নিয়ে অবিরাম প্রচার চালিয়েছে। অথচ আজ তারা যুক্তরাষ্ট্রে রুশ প্রেসিডেন্টকে লালগালিচা সংবর্ধনা পেতে দেখল।’