
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আগামী চন্দ্রাভিযানের জন্য চন্দ্রযান তৈরির কথা ছিল ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বিলম্বের কারণে নাসা এ– সংক্রান্ত চুক্তিটি নতুন দরদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে। গতকাল সোমবার সংস্থাটি এ ঘোষণা দিয়েছে।
নাসার এই সিদ্ধান্তের ফলে জেফ বেজোসের মালিকানাধীন ব্লু অরিজিনের মতো মহাকাশ সংস্থা অর্ধশতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো মহাকাশচারীদের চাঁদে অবতরণের জন্য চন্দ্রযান তৈরির সুযোগ পেতে যাচ্ছে।
নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি ফক্স নিউজের ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি এই চুক্তিটি আবার উন্মুক্ত করার প্রক্রিয়ায় আছি। আমার ধারণা, ব্লু অরিজিনের মতো কোম্পানিগুলো এতে অংশ নেবে। হয়তো অন্যরাও আসবে।’
২০৩০ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে চীন। এমন পরিস্থিতিতে নাসার আর্টেমিস চন্দ্র অভিযান কর্মসূচি দ্রুত এগিয়ে নিতে এবং স্পেসএক্সকে স্টারশিপ চন্দ্রযান তৈরিতে অগ্রগতির জন্য উৎসাহিত করতে সংস্থাটির অভ্যন্তরে কয়েক মাস ধরে চাপ বাড়ছিল। এই চাপের মধ্যেই নতুন করে চন্দ্রযান নির্মাণের চুক্তি উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিলেন শন ডাফি।
নাসার চন্দ্র অভিযান সংক্রান্ত কৌশলে এটি অনেক বড় পরিবর্তন। দুই বছরের মধ্যেই নির্ধারিত সময়ে চাঁদে অবতরণের লক্ষ্য সামনে রেখে কারা চন্দ্রযান তৈরি করবে, তা নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। ব্লু অরিজিন এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে লকহিড মার্টিন জানিয়েছে, তারা একটি দল গঠন করে নাসার প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।
২০২১ সালে একটি চুক্তির অধীন স্টারশিপ চন্দ্রযান তৈরির জন্য স্পেসএক্সকে বেছে নিয়েছিল নাসা। ওই চুক্তির বর্তমান মূল্য ৪৪০ কোটি ডলার। লক্ষ্য ছিল ২০২৭ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানো। তবে নাসার উপদেষ্টারা মনে করছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কারণে এ সময়সীমা কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে।
স্পেসএক্সের চাঁদে অবতরণ যান তৈরির বিষয়ে নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি বলেন, তাঁরা অসাধারণ সব কাজ করছে; কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা থেকে পিছিয়ে আছে।
শন ডাফি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চান, ২০২৯ সালে হোয়াইট হাউসে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেন এই অভিযান সম্পন্ন হয়।
তবে নাসার এ ঘোষণায় কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি বলেন, মহাকাশশিল্পের অন্য কোম্পানির তুলনায় স্পেসএক্স বজ্রগতিতে এগোচ্ছে। স্টারশিপই শেষ পর্যন্ত পুরো চন্দ্র অভিযান সম্পন্ন করবে।