অভিবাসী কর্মী বেড়েছে, রেমিট্যান্সপ্রবাহ নেতিবাচক

২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী কাজের উদ্দেশে বিদেশে গেছেন
ফাইল ছবি

২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী কাজের উদ্দেশে বিদেশে গেছেন। চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত গেছেন ১০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪ জন। ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছর অভিবাসনপ্রবাহ বাড়বে ৮১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

‘আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসনের গতিপ্রকৃতি ২০২২: অর্জন ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরেছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

চলতি বছর রেমিট্যান্সপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২১ সালে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এ বছরের নভেম্বর পর্যন্ত এসেছে ১৯ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ধারা অব্যাহত থাকলে গত বছরের তুলনায় রেমিট্যান্স কমবে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর বিদেশে অদক্ষ কর্মী যাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি।

কর্মীদের বিদেশ যাওয়ার প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গন্তব্য দেশের ক্ষেত্রে সব সময় এক রাষ্ট্রকেন্দ্রিক প্রবণতা দেখা যায়। এতে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রে যদি কোনো বিপদ ঘটে, তাহলে বাজার সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবারও কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ঢাকা ও নরসিংদী থেকে বেশি লোক বিদেশে গেছেন বলে প্রতিবেদনে এসেছে।

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে রামরুর লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার বিভিন্ন এলাকায় সেভাবে অভিবাসন নিয়ে যেতে পারছি না। মূলত অভিবাসন কতগুলো পকেট থেকেই হচ্ছে। পকেট থেকে হওয়ার যৌক্তিক কারণও আছে। কারণ, প্রায় আশি ভাগই অভিবাসন ঘটে ব্যক্তির উদ্যোগে। অর্থাৎ ব্যক্তিরা ভিসা সংগ্রহ করে পরিবারে পাঠান। পরিবারের পক্ষ থেকে যে ভিসাগুলো আসে, সেগুলো মূলত অদক্ষ কর্মীর ভিসা।’

আরও পড়ুন

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন গন্তব্য দেশে ১৫ হাজার ৩৬৮ জন বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ অভিবাসী মারা গেছেন।

অভিবাসীরা সারা পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করেন উল্লেখ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, অভিবাসীরা অন্য দেশে ন্যায়বিচার পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এখানে সমঝোতার অভাব আছে। এ নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চার বছর মালয়েশিয়ার বাজার বন্ধ ছিল। এ বছর এ নিয়ে সমঝোতা হয়েছে ও মালয়েশিয়ার বাজার খুলেছে। ১ হাজার ৫০০–এর বেশি রিক্রুটিং এজেন্সি থাকলেও একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়। নতুন সিন্ডিকেটে আরও ৫০ জনকে ঢুকিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। ৭৫ এজেন্সি এখন মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাবে। বাকিরা হয়ে যাবে তাদের দালাল। বিষয়টি দুঃখজনক।

আরও পড়ুন