প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারও রক্তচক্ষু কিংবা ধমকে মাথা নত করেন না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার বিকল্প তিনি নিজেই। হিমালয় পর্বতের মতো উচ্চতায় তাঁর জনপ্রিয়তা। তিনি কারও রক্তচক্ষু কিংবা ধমকে মাথা নত করেন না। ঘাবড়ে যান না। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তিনি সব সময় মাথা উঁচু করে পথ চলতে শিখেছেন এবং আমাদের শিখিয়েছেন, শেখার প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন।’
আজ শনিবার ধামরাই উপজেলায় মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের বৈন্যা গ্রামে ‘বৈন্যা-কুশুরা পুলিশ ক্যাম্প উদ্বোধন’ উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আপনারা টের পাচ্ছেন। যারা স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি, তারা একত্র হয়ে দুঃস্বপ্ন দেখছে, তারা আবার নাকি বাংলাদেশের মসনদে আসবে। কীভাবে আসবে? জনগণের ভোট পেতে হবে তো। যেখানে জনগণ আজ দৃঢ়তার সঙ্গে বলছে, শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই। তাহলে কীভাবে সম্ভব? তারা ভোটে বিশ্বাস করে না। ভোটে যাবে না। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যদি কেউ তাদের গদিটা পাইয়ে দেয়, সেই ধরনের ষড়যন্ত্র তারা করে চলেছে। শেখ হাসিনা কোনো ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করেন না, পেশিশক্তিতে বিশ্বাস করেন না। তিনি বিশ্বাস করেন জনগণের শক্তি।’
বিদ্যুতের ঘাটতি ও দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু মানুষ অভিযোগ করছে, আমরা বিদ্যুৎ পাই না। আমাদের এখন ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। সারা দেশে বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। তবু বিদ্যুতের ঘাটতি কেন—প্রশ্ন আসতেই পারে। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপাদান ডিজেল, এলএনজি, কয়লা—এগুলোর পরিবহন ব্যয় তিন–চার গুণ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জুনের শেষে বিদ্যুতের আর ঘাটতি থাকবে না। দ্রব্যমূল্যের দাম অবশ্যই কিছুটা বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকির পর ভর্তুকি দিচ্ছে। ভর্তুকি দিতে গিয়ে কিছুটা অর্থনৈতিক চাপে পড়েছে। তারপরও আমাদের কিন্তু কোনোটাতেই কমতি নেই।’
সবার সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তরুণ-যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমন করা হয়েছে। মাদকও নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ ক্যাম্পের নামফলক উন্মোচন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে ক্যাম্প–সংলগ্ন খেলার মাঠে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক) আবদুল্লাহ হিল কাফীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ, ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘নির্বাচন এলেই অনেক স্রোত কাউন্টার স্রোত আসে। যারা গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায় না, তারা নির্বাচন এলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না কিংবা নির্বাচন যাতে না হয়, সে জন্য হইচই করতে থাকে। এ ধরনের কিছু কার্যকলাপ আমরা এখন দেখছি। আমরা সব সময় দেখে আসছি, ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচন এলেই এক হয়ে যায়, আরেকটি নতুন ষড়যন্ত্রের জন্য।’
জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচির অনুমতি–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অনুষ্ঠান করত। এবার তাদের বলে দেওয়া হয়েছে, ওই জায়গায় অনুষ্ঠান করলে তীব্র যানজট হবে। তারা যেন অন্য কোনো ভেন্যুতে যায়। সে জন্যই তারা ভেন্যু পরিবর্তন করেছে।