টঙ্গীতে জাহাঙ্গীরের মায়ের গণসংযোগে আবারও হামলা

জায়েদা খাতুনের গণসংযোগের সময় হামলায় ভাঙচুর করা গাড়ি। শনিবার বিকেলে টঙ্গীর পূর্ব বাজার রোডে
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের গণসংযোগে আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে টঙ্গী পূর্ব বউবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় গণসংযোগে ব্যবহৃত দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে তাঁদের পথ আটকে দেওয়া হয়। পরে থানা-পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। হামলায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর পূর্ব গোপালপুর এলাকায় একইভাবে জায়েদার গণসংযোগে ব্যবহৃত গাড়িতে হামলা করা হয়। একপর্যায়ে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে টঙ্গী পূর্ব থানায় আশ্রয় নেন তাঁরা। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাহাঙ্গীর আলম তাঁর মা জায়েদা খাতুনকে নিয়ে আজ দুপুরে টঙ্গী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন। একটি প্রাডো গাড়িতে তিনি ও তাঁর মাসহ কয়েকজন কর্মী ছিলেন। পেছনে আরেকটি মাইক্রোবাসে তাঁর কয়েকজন কর্মী-সমর্থক প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁদের গাড়ি টঙ্গীর পূর্ব বউবাজার এলাকায় গেলেও হঠাৎ তাঁদের পথ আটকে ধরেন ২০-৩০ জন তরুণ-যুবক। ওই তরুণ-যুবকেরা তাঁদের গাড়ি থামিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে ‘নৌকা’ প্রতীকের স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর ও তাঁর মাকে বহনকারী প্রাডো গাড়ি ও মাইক্রোবাসের কাচ ভাঙচুর করেন। এ সময় হামলাকারীদের হকিস্টিকের আঘাতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। পরে পুলিশের পাহারায় জাহাঙ্গীর ও জায়েদা খাতুনকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রচারণা চালাতে গেলেই তাঁরা আমার ও আমার মায়ের ওপর হামলা করে। আমাকে তাদের এত ভয় কিসের? আমার মা একজন প্রার্থী। তিনি কি প্রচারণা চালাতে পারবেন না? হামলা চালিয়ে আজসহ দুবার আমার গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তারা আমার কর্মীদের মারধর করেছে।’

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ শেষে বউবাজার হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিকে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে তাঁদের সামনে নৌকা প্রতীকের একটি মিছিল পড়ে। এ সময় মিছিলের কিছু উৎসুক লোক তাঁদের পথ আটকে দেয়। একপর্যায়ে কয়েকজন তাঁদের গাড়ির কাচ ভাঙে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশি পাহারায় তাঁদের বাড়িতে যেতে সহযোগিতা করে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন

২৫ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭৮ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মা জায়েদা খাতুনের নামেও মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা বাতিল হলেও জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে মাকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।

আরও পড়ুন