একটানে উঠে এল ৪ টন ওজনের ৩২০টি উলুয়া মাছ

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারে উঠে আসা উলুয়া মাছ। রোববার রাতে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া খালে ছৈয়দ আলমের ফিশারিজেছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একটি মাছ ধরা ট্রলারের জালে একটানে ছোট-বড় ৩২০টি উলুয়া মাছ ধরা পড়েছে। আজ রোববার বিকেল চারটার দিকে প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণে বাংলাদেশের জলসীমানায় বঙ্গোপসাগরের ‘মৌলভীর শীল’ এলাকায় মাছগুলো জেলেদের জালে ধরা পড়ে।

ধরা পড়া ৩২০টি মাছের মধ্যে ৫৫টি মাছের ওজন ৮ থেকে ১০ কেজি। বাকি ২৬৫টি মাছের ওজন ১১ থেকে ১৭ কেজি। প্রায় ৪ টন ওজনের মাছগুলো ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। উলুয়া মাছকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ‘নাগু মাছ’ বলা হয়। মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ক্যারানক্স ইগনোবিলিস। ইংরেজিতে জায়ান্ট ট্রেভেলি বলা হয়।

এমভি দেলোয়ার নামের একটি মাছ ধরা ট্রলারে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারের মালিক টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

ওই ট্রলারের মাঝি আজিজুল হক জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ‘মৌলভীর শীল’ এলাকায় তাঁরা জাল ফেলেন। কয়েক ঘণ্টা পর বিকেলে জালে মাছের ঝাঁক আটকা পড়লে সাগরের পানি নড়াচড়া করতে দেখেন। জেলেরা বুঝতে পারেন, জালে মাছের বড় ঝাঁক আটকা পড়েছে। তখন আশপাশের জেলেদের খবর দিয়ে জাল টানা শুরু করলে নাগু মাছের ঝাঁক উঠে আসে। প্রতিটি মাছের ওজন ৮ থেকে ১৭ কেজি পর্যন্ত। সেখান ট্রলার মালিককে বিষয়টি জানানো হয়। রাত নয়টার দিকে মাছ নিয়ে টেকনাফের কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে আসেন।

আরও পড়ুন

রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, বড় বড় প্লাস্টিকের ঝুড়িভর্তি করে ট্রলার থেকে মাছ খালাস করে স্তূপ করেন। কেউ কেউ ওজনযন্ত্রে মাছ তুলে পরিমাপ করছেন। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বরফের গুড়া এনে মাছের ওপর বিলিয়ে দিচ্ছেন। মাছগুলো একনজর দেখতে স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেন। পরে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী জামাল হোসেনসহ আরও অনেকে প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে কিছুসংখ্যক মাছ কিনে নেন।

আরও পড়ুন

মাছ ব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম ও মোহাম্মদ সাইফুল বলেন, তাঁরা কয়েকজন মিলে ২৬৫টি (তিন টন) মাছ কিনে নিয়েছেন। এসব মাছ তাঁরা ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি সাড়ে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করবেন। ঢাকা-চট্টগ্রামের হাটবাজারে এ মাছের কদর আছে বলে তাঁরা জানান। টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এম কায়সার বলেন, ‘মাছগুলো দেখে লোভ সামলাতে না পেরে ৫ হাজার টাকায় ১৫ কেজি ওজনের একটি মাছ কিনেছি। চট্টগ্রামে পরিবারের জন্য মাছটি পাঠাব।’

আরও পড়ুন

টেকনাফের জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি অবশ্যই সুখবর। সরকারি বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা মানায় বর্তমানে জেলেদের জালে ছোট-বড় প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে। মাছগুলো চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রয় করতে পারলে আরও ভালো দাম পাওয়া যেত।

আরও পড়ুন