সাঁথিয়ায় নৌকা ও ট্রাকের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি হামলা, আহত ২৫

ভাঙচুরের শিকার সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। শুক্রবার রাতে
ছবি: প্রথম আলো

পাবনা-১ (সাঁথিয়া ও বেড়ার একাংশ) আসনের নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সাঁথিয়া পৌর এলাকার বোয়ালমারী বাজার ও থানা মোড় এলাকায় দুই দফায় এ হামলা হয়। এ সময় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে।

পাবনা-১ আসনে মোট ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক (নৌকা)। তিনি এ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর প্রতীক ট্রাক। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই এই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল।

আরও পড়ুন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বিকেলে বোয়ালমারী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইয়িদের পক্ষে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভা শেষে তাঁর সমর্থকদের একটি মিছিল শুরু হওয়ার পর থানা মোড় এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা মিছিলের পেছন দিকের লোকজনের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে ১০–১২ জন আহত হন। পরে সন্ধ্যার পর বেড়া থেকে নৌকা প্রতীকের পক্ষে যুবলীগের একটি মোটরসাইকেল বহর সাঁথিয়া পৌর এলাকার মাদ্রাসার কাছে এলে সেটিতে পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল মিছিলে অংশ নেওয়া ১০–১২ জন আহত হন।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নৌকার প্রার্থী ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক ও ট্রাকের প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল।

এ দুই ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই পাল্টাপাল্টি হামলার এক পর্যায়ে সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। নৌকার সমর্থকদের অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইয়িদের সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে এই ভাঙচুর করেছেন। তবে আবু সাইয়িদের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

আবু সাইয়িদের সমর্থক সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল-মাহমুদ বলেন, ‘আমি ও সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মিরাজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে যোগ দেওয়ার পর থেকে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভীত হয়ে নৌকা প্রতীকের লোকজন আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করেছে। আর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের যে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা নিজেরাই ভাঙচুর করে কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আমাদের বিরুদ্ধে দোষ দিচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলেই আসল ঘটনা জানা যাবে।’

শামসুল হকের সমর্থক সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী খান বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা মিছিল নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। এ সময় কার্যালয়ের কেয়ারটেকার আহত হন। এ ছাড়া বোয়ালমারী মাদ্রাসার কাছে আমাদের সমর্থকদের একটি মোটরসাইকেল বহরে তারা হামলা চালিয়ে ১০–১২ জনকে আহত করে।’

আরও পড়ুন

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথমে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মিছিলে পেছনের দিক থেকে কে বা কারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বলে আমরা শুনতে পাই। পরে এরই জের ধরে করমজা থেকে সাঁথিয়ার দিকে আসতে থাকা নৌকার মিছিলের পেছনের দিকে কে বা কারা ইটপাটকেল ছোড়ে। দুই ঘটনাতেই পাঁচ-ছয়জন করে আহত হন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরেরও অভিযোগ পেয়েছি। এসব ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই মামলা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন