চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে অনশন করা সেই যুবক মারা গেছেন

বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনে বসে আলোচনায় এসেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ ওরফে রুমেল
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শরীরে কাফনের কাপড় ও শিকল পরে দুই দফা আমরণ অনশনে বসে আলোচনায় এসেছিলেন ক্রিকেটভক্ত যুবক হুমায়ন আহম্মেদ ওরফে মো. রুমেল (৩২)। শেষ দফায় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন তিনি। বগুড়ার বিমানবন্দর চালুর দাবিতে ঈদের পর হুমায়ন আহম্মেদ আবার অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন এই যুবক। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া শহরের নাটাই পূর্বপাড়ার পৈতৃক বাড়িতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।

আরও পড়ুন

হুমায়ন আহম্মেদ নাটাই পূর্বপাড়ার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিডিও বানিয়ে ‘চ্যানেল বগুড়া টিভি’ নামে একটি ফেসবুক পেজে প্রচার করতেন তিনি। সবশেষ গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, বগুড়ার বিমানবন্দর চালুর দাবিতে ঈদের পর অনশন কর্মসূচিতে বসবেন তিনি।

রুমেলের খালাতো বোন রুমি বেগম বলেন, ‘রুমেল অবিবাহিত ছিলেন। তিনি বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকতেন। অতিরিক্ত গরমের কারণে আজ সকালে রুমেল অসুস্থ পড়েন। এ সময় বুকের ব্যথায় ছটফট করতে থাকেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগে রুমেল বাড়িতেই মারা যান।’

আরও পড়ুন

শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে বিসিবির লোকবল প্রত্যাহারসহ ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে এবং স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ফিরে পাওয়ার দাবিতে গত ৫ মার্চ শহরের সাতমাথায় কাফনের কাপড় পরে পরে আমরণ অনশন শুরু করেন হুমায়ন আহম্মেদ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর ভেন্যু ফেরানোর বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন তিনি। একই দাবিতে আবার ১৮ মার্চ শহরের সাতমাথা এলাকায় গায়ে কাফনের কাপড় এবং হাত ও গলায় শিকল পরে ফুটপাতে অনশন কর্মসূচিতে বসেন হুমায়ন আহম্মেদ। পরে ওই দিনই সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ওই যুবকের অনশন ভাঙান।

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে দ্বন্দ্বে স্টেডিয়ামের মূল মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে স্টেডিয়ামটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২ মার্চ এনএসসি সচিবকে পাঠানো বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে স্টেডিয়ামটি হস্তান্তরের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এরপর ওই দিনই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কর্মরত বিসিবির ১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বগুড়া থেকে প্রত্যাহার করে পরবর্তীকালে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বদলি করা হয়। এ ছাড়া স্টেডিয়ামে থাকা রোলার, পিচ কভারসহ মাঠ ও খেলার যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ড্রেসিংরুমের আসবাব ঢাকায় নিয়ে যায় বিসিবি। ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে আন্দোলন ও দাবির মুখে ৮ এপ্রিল শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুন