ট্রেন ও ছোট যানে রংপুরের পথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা

রংপুরে বাস ধর্মঘটের কারণে পঞ্চগড় থেকে রংপুরগামী সব বাস চলাচল বন্ধ আছে। রংপুরে যাতায়াত করা বিআরটিসির বাসও চলছে না। শুক্রবার বিকেলে শহরের ধাক্কামারা এলাকার বিআরটিসি কাউন্টারে
ছবি: রাজিউর রহমান

পঞ্চগড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাস বন্ধের ঘোষণা না দেওয়া হলেও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় থেকে সরাসরি রংপুরগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুরে বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে।

এদিকে আগামীকাল শনিবার রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে দলটির নেতা-কর্মীরা আগেভাগে রওনা হয়েছেন। সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কমায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের কেউ বাসে আবার কেউ কেউ আজ সকালের ‘দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। এ ছাড়া অনেকে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে রংপুরে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে রংপুরের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পঞ্চগড় থেকে সকালে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাসগুলো রংপুরে না ঢুকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর বা ফুলবাড়ী দিয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছে।

বিএনপির নেতাদের দাবি, গণসমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে রংপুরের সব রুটে বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের জেলায়ও বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। তবে বাস না পেলেও নেতা-কর্মীরা অন্য যেকোনো উপায়ে রংপুরে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মূলত বিএনপির গণসমাবেশ ঠেকাতে এভাবে গাড়ি বন্ধ করে রেখেছে সরকার। তিনি গতকাল রংপুরে পৌঁছেছেন। ইতিমধ্যে পঞ্চগড় থেকে চার–পাঁচ হাজার নেতা-কর্মী রংপুরে পৌঁছেছেন। তাঁদের বেশির ভাগ বাস বন্ধের আগের দিন বাসে রংপুরে গেছেন। এ ছাড়া কেউ ট্রেনে, কেউ মাইক্রোবাসে আবার কেউ মোটরসাইকেলে রংপুরে যাচ্ছেন।

আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ছয়টায় পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন থেকে সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস টেনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের রংপুরে যেতে দেখা গেছে। শহরের ধাক্কামারা এলাকার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, দিনাজপুরে নিয়মিত বাস (গেটলক সার্ভিস) চলাচল করছে। তবে জেলা শহরের বিআরটিসি বাস কাউন্টারগুলোর বেশির ভাগ বন্ধ।

পঞ্চগড় থেকে রংপুরগামী বাস বন্ধ থাকলেও চালু আছে দিনাজপুরগামী গেটলক সার্ভিস। শুক্রবার সকালে শহরের ধাক্কামারা গোল চত্বর থেকে দিনাজপুরগামী বাসে উঠছেন যাত্রীরা
ছবি: রাজিউর রহমান

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সকাল ছয়টায় দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি রংপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। দুপুরে তিনি রংপুরে পৌঁছান। যানবাহন বন্ধ থাকলেও তাঁদের নেতা-কর্মীরা যেকোনো উপায়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন বলে তিনি জানান।

পঞ্চগড় জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় থেকে বাস বন্ধের কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে রংপুরের বিভাগীয় কমিটি যে ঘোষণা দিয়েছে, তা মেনে পঞ্চগড় থেকে রংপুরে সরাসরি কোনো গাড়ি যায়নি। পঞ্চগড় থেকে পাঁচটি উপজেলা ও দিনাজপুরে বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে।

আরও পড়ুন

এদিকে পঞ্চগড় থেকে রংপুরগামী বিআরটিসিসহ অন্যান্য বাস বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। অনেকে চিকিৎসার জন্য রংপুরে যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে দুর্ভোগে পড়েন। সরাসরি রংপুরের বাস না পেয়ে অনেককে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য যানে গন্তব্যে যেতে হয়েছে।

সকালে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকার নাজিরা বেগম (৪৫)। অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসক দেখাতে স্বামীর সঙ্গে রংপুরের উদ্দেশে বের হয়েছেন। কিন্তু জেলা শহরে আসার পর জানতে পারেন, রংপুরের বাস বন্ধ। বাস বন্ধে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। এখন অন্য কোনো উপায়ে রংপুরে যেতে ভিন্ন গাড়ি খুঁজছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন