দ্রুত ক্যালরি পোড়াতে যে ৯টি ব্যায়াম করবেন

দ্রুত ক্যালরি পোড়ানোর জন্য কিছু কার্যকর ব্যায়াম আছেছবি: কবির হোসেন

অনেকে প্রতিদিন একবার করে ভাবেন, আগামীকাল থেকে ব্যায়াম শুরু করব। কিন্তু সেই আগামীকাল আর আসে না। এই আজ-কাল করতে করতে কখনোই আর ব্যায়াম শুরু করা হয় না। তবে এমন কিছু ব্যায়াম আছে, যেসবের চর্চা করে কম সময়েই অনেক ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব। এসব ব্যায়ামকে বলা হয়, এইচআইআইটি (হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং)। চলুন জেনে নিই, দ্রুত ক্যালরি পোড়াতে পারে—এমন ৯টি এইচআইআইটি ব্যায়াম সম্পর্কে।


জাম্পিং জ্যাকস  
জাম্পিং জ্যাকস খুবই সহজ কার্ডিও ব্যায়াম, যা শরীর গরম করার পাশাপাশি দ্রুত ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি প্রতি মিনিটে ৮ থেকে ১১ দশমিক ৮ ক্যালরি পোড়ায়। হাত-পা একসঙ্গে ছড়িয়ে লাফানোর মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন পেশি কাজ করে। ব্যায়াম করার শুরুতে ওয়ার্মআপ হিসেবে জাম্পিং জ্যাকস করা যেতে পারে।


হাই নি রানিং
হাই নি রানিং মূলত দ্রুতগতির কার্ডিও ব্যায়াম। এ ব্যায়াম করার জন্য দৌড়ানোর সময় হাঁটু যত দূর সম্ভব উঁচু করে দৌড়াতে হয়। এভাবে দৌড়ানোর ফলে প্রতি মিনিটে ৩ দশমিক ৫ থেকে ৭ ক্যালরি পর্যন্ত পোড়ানো সম্ভব। এটি পায়ের পেশি ও কোমরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বাড়ির সামনে অল্প জায়গাতেই ব্যায়ামটি করা সম্ভব।

বাট কিকস
বাট কিকসও একধরনের দ্রুতগতির ব্যায়াম। এই ব্যায়াম করার সময় দৌড়ানোর মতো করে এক পা এমনভাবে পেছনে তোলা হয়, যেন পায়ের গোড়ালি শরীরের পশ্চাৎভাগে আঘাত করছে। এই ব্যায়ামে মিনিটে ৮ থেকে ১২ ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব। এটি মূলত হাঁটু ও উরুর পেছনের পেশি শক্তিশালী করে। একটানা ৩০ মিনিট ব্যায়ামটি করলে দ্রুত ক্যালরি পড়ানো সম্ভব।

দড়িলাফে দ্রুত ওজন কমে
মডেল: আইরিন, ছবি: প্রথম আলো

মাউন্টেন ক্লাইম্বার
মাউন্টেন ক্লাইম্বার এমন এক ব্যায়াম, যেখানে শরীরের প্রায় প্রতিটি পেশি কাজ করে। প্ল্যাঙ্ক করা অবস্থানে থেকে এক পা করে দ্রুতগতিতে বুকে টেনে আনতে হয় এই ব্যায়ামে। এটি হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। প্রতি মিনিটে ৭ থেকে ১২ ক্যালরি পর্যন্ত পোড়ে এই ব্যয়ামে।


দড়িলাফ
দড়িলাফ শরীরচর্চার এক বহুল প্রচলিত পদ্ধতি। প্রতি মিনিটে প্রায় ৭ দশমিক ৬ থেকে ৯ দশমিক ৮ ক্যালরি পোড়ে দড়িলাফে। এটি পায়ের পাশাপাশি হাত, কাঁধ ও কোমরের পেশিগুলোও সক্রিয় রাখে। ঘরে খুব অল্প জায়গায় এই ব্যায়াম করা যায়।

স্টেশনারি সাইক্লিং
যাঁরা হাঁটুর ওপর চাপ না দিয়ে ক্যালরি পোড়াতে চান, তাঁদের জন্য স্টেশনারি বাইক চালানো আদর্শ। এই ব্যায়াম আধা ঘণ্টা করলেই ২১০ থেকে ৩১১ ক্যালরি পোড়ানো যায়। এটি হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং পায়ের পেশি মজবুত করে।


সাঁতার
সাঁতারে আধা ঘণ্টায় ১৯৮ থেকে ২৯৪ ক্যালরি পোড়ে। এ ছাড়া সাঁতার কাটলে পেশি, হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। যাঁদের জয়েন্টে সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এটি আদর্শ ব্যায়াম।

আরও পড়ুন

স্প্রিন্ট
ক্যালরি পোড়ানোর জন্য দ্রুত দৌড়ানোই সবচেয়ে কার্যকর ব্যায়াম, যা প্রতি মিনিটে ১০ দশমিক ৮ থেকে ১৬ ক্যালরি পোড়ায়। নিয়মিত দৌড়ানোর ফলে ওজন কমার পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। আপনি নিজের সুবিধামতো সকালে বা বিকেলে ফাঁকা রাস্তায় বা ট্রেডমিলে দ্রুত দৌড়াতে পারেন।


হাইকিং
প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁটার মাধ্যমে শরীরচর্চা করার সহজ ও আনন্দদায়ক উপায় হলো হাইকিং। এটি একদিকে যেমন পেশি শক্তিশালী করে, তেমনি মানসিক চাপও কমায়।  

জোরে দৌড়ালে দ্রুত ক্যালরি বার্ন হয়
মডেল: আজিম–উদ–দৌলা, ছবি: নকশা

শুরুর আগে জেনে রাখুন

আপনার যদি আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে নতুন কোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
১. সহজ ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে সময় ও গতি বাড়াতে থাকুন।
২. শরীরচর্চার আগে অবশ্যই ওয়ার্ম আপ বা শরীর গরম করে নিতে হবে। শরীরচর্চা শেষে শরীরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য কুল ডাউন অর্থাৎ কিছুক্ষণ হালকাভাবে পেশি স্ট্রেচিং করতে হবে।
৩. ব্যস্ততার মধ্যেও দিনে মাত্র ২০-৩০ মিনিটের ব্যায়াম আপনার শরীর ও মনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তাই আলসেমি ছেড়ে আজই শুরু করুন।


সূত্র: হেলথলাইন

আরও পড়ুন