সুস্থ থাকতে চান? তাহলে ‘বোরিং’ জীবনযাপন করুন

তামাম দুনিয়া যখন জীবনকে পুরোপুরি উপভোগ করা এবং নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য উন্মাতাল, তখন একটি মতবাদ বলছে, ‘বোরিং’ বা একঘেয়ে জীবনযাপনই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী।

যেদিন আপনার ব্যায়াম করতে ইচ্ছে করবে না, সেদিনও ব্যায়াম করলে পাবেন অবিশ্বাস্য উপকারিতামডেল: এলভিন, ছবি: প্রথম আলো

কানাডাভিত্তিক ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার ড্যান গো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়। এই ফিটনেস কোচ স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য একঘেয়ে রুটিন মেনে চলার পরামর্শ দেন। তবে তাঁর এই পরামর্শ নতুনত্বের প্রতি মানুষের আকর্ষণকে চ্যালেঞ্জ করে।

ড্যানের কথা হলো, স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য কয়েক দিন পরপর নানা হুজুগে মেতে ওঠার চেয়ে সাধারণ কিছু অভ্যাসের (যেমন নিয়মিত ঘুম, একই ধরনের খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা ইত্যাদি) গুরুত্ব বেশি। এসব কাজ বিপাকক্রিয়া, হৃৎস্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার জন্য দারুণ কার্যকর। দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে চাইলে ব্যয়বহুল ডায়েটের চেয়ে এসব অভ্যাস রপ্ত করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি এক ভাইরাল পোস্টে ড্যান গো বলেছেন, ‘শরীর সুন্দর রাখার প্রক্রিয়াটি ততটা সুন্দর নয়, যতটা বাইরে থেকে সবাই মনে করে। এ ক্ষেত্রে কঠোর নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে প্রতিদিন একঘেয়ে কিছু কাজ নিয়মিতভাবে করা প্রয়োজন। বিশেষত যেদিন আপনার কাজগুলো করতে ইচ্ছে করবে না, সেদিনও করতে হবে।’

একঘেয়েমিকে ভালোবাসতে শিখুন

ড্যান গো তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে উল্লেখ করেছেন, শরীর সুন্দর ও সুস্থ রাখতে একঘেয়ে জীবনযাপনকে ভালোবাসতে হবে। এটা শুনতে যতটা সহজ, বাস্তবে কিন্তু মোটেও সহজ নয়। কারণ, ড্যান গোর মতে বোরিং বা একঘেয়ে জীবনযাপনের মানে হলো—

  • নির্দিষ্ট একটি সময়ে ঘুমানো এবং জেগে ওঠা।

  • প্রতিদিন একই ব্যায়াম করা।

  • প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খাওয়া।

  • মুখরোচক খাবার বাদ দিয়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।

  • নিয়মিত হাঁটা।

আরও পড়ুন

হুজুগের চেয়ে স্বাস্থ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিন

ফাস্ট ফুড খাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন স্ক্রলিং, কদিন পরপর নিত্যনতুন উপায়ে সুস্থ থাকতে চাওয়া—এসব আদতে সাময়িক পরিতৃপ্তি দেয়। দীর্ঘ মেয়াদে এসব আপনার স্বাস্থ্যের ভীষণ ক্ষতিই ডেকে আনে।

তাই ড্যান গোর একঘেয়ে রুটিন মেনে চলার অভ্যাস করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ রোজ হাঁটতে যান, ভেজালমুক্ত খাবার খান, রুটিনমাফিক জীবনযাপন করুন। এতে আপনার বিপাকক্রিয়া উন্নত হবে, হৃৎপিণ্ড ও মানসিক স্বাস্থ্যও থাকবে ভালো। ব্যয়বহুল ডায়েটও আপনার জন্য এতটা সুফল বয়ে আনতে পারবে না।

আরও পড়ুন

সুস্থ থাকতে রুটিন মেনে চলা কেন জরুরি

স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চললে যেকোনো অভ্যাসেরই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। এতে আত্মনিয়ন্ত্রণক্ষমতা বাড়ে, শরীর ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে থাকে। সুস্থ থাকতে হলে শরীরের নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি। প্রতিদিন একই সময়ে এবং একই পরিমাণে ঘুমানো, একই সময়ে ব্যায়াম করা, সুষম খাবার খাওয়া—এসব অভ্যাস শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে পরিচালিত হতে সহায়তা করে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এতে হরমোনের মাত্রা ঠিক থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, ছকে বাঁধা জীবন চাপ কমায়, মনোযোগ বাড়ায়। সবশেষে এটাই বলা যায়, ড্যান গোর মতবাদ মেনে চলা কঠিন হলেও এতে যে আপনি দীর্ঘ মেয়াদি ইতিবাচক ফল পাবেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

সূত্র: জিকিউ

আরও পড়ুন