৯১ বছরেও সোফিয়া লরেন সুস্থ আছেন যেভাবে
কিংবদন্তিতুল্য ইতালীয় অভিনেত্রী সোফিয়া লরেন নিজেকে জীবনের আনন্দ থেকে কখনো বঞ্চিত করেন না। প্রিয় খাবার, মিষ্টি কিংবা ছোট কোনো বিলাসিতা—সবকিছুই উপভোগ করেন পরিমিতভাবে। তাঁর মতে, ‘আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে জীবনকে ভালোবেসে বাঁচার মধ্যেই।’ ৯১ বছর বয়সেও সক্রিয় আছেন তাঁর প্রতিদিনের জীবনযাপনের অভ্যাসের কারণেই। আর সেখানে ব্যায়ামের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
দিনের শুরুটা করেন যেভাবে
সোফিয়া ঘুম থেকে ওঠেন সকাল ছয়টার আগে। এরপর ব্যায়াম করেন নিয়মিত, বিশেষ করে ক্যালিসথেনিক্স, যা শরীরের ওজন ব্যবহার করে পেশি শক্তিশালী করার একটি অনুশীলনপদ্ধতি।
২০১৯ আর ২০২০ সালে দেওয়া সোফিয়ার তিনটি সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবনের বিভিন্ন অনুশীলন ও ইতিবাচক মানসিকতা উঠে এসেছে চমৎকারভাবে। যেমন পাঁচ বছর আগে ২০২০ সালে ‘হাউট লিভিং সান ফ্রান্সিসকো’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সব সময় ব্যায়াম এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপনকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। শরীর আর মনের যত্নে দুটিই সমান জরুরি। এখনো প্রতিদিন সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠি, তারপর ৪৫ মিনিট ধরে ক্যালিসথেনিক্স করি। এতে দিনটা শুরু হয় ইতিবাচকভাবে, মনও ভালো থাকে।’
সোফিয়া এটাও মনে করেন, ব্যায়াম আর শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা শুধু শরীর ঠিক রাখার জন্যই নয়; এসব তাঁর ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে ছন্দ আর মনোযোগ এনে দেয়।
বয়স নিয়ে ভাবনা
বয়স্ক হওয়া নিয়েও সোফিয়া লরেনের দৃষ্টিভঙ্গি বেশ প্রশংসনীয়। ২০১৯ সালে ‘হ্যালো ম্যাগাজিন’ জিজ্ঞেস করেছিল, তাঁর তারুণ্যের রহস্য কী?
সোফিয়া বলেছিলেন, ‘এর কোনো রহস্য নেই। এই চেহারাটা নিয়েই আমি জন্মেছি। আমি যেমনভাবে জন্মেছি, নিজেকে তেমনভাবেই রাখতে ভালোবাসি। এর বাইরে কোনো গোপন রহস্য নেই।’
২০২০ সালে ‘এএআরপি ম্যাগাজিন’–এর ডিসেম্বর–জানুয়ারি সংখ্যায় বলেছিলেন, ‘আমার বয়স ৮৬, নিজেই বিশ্বাস করতে পারি না। আমার মনে হয়, আমি এখনো ২০ বছরের তরুণী। আয়নায় নিজের দিকে তাকালে নিজেকে উৎসাহ দিই। নিজেকে জিজ্ঞেস করি না—“আমি কি সুন্দর?” বা “আমি কি অসাধারণ?” বরং ভাবি, ভেতর থেকে কেমন অনুভব করছি, আমি কতটা আত্মবিশ্বাসী, কতটা সুখী। কারণ, দিন শেষে আসল বিষয় সেটাই।’
সহজ অভ্যাস
নিজের যত্নে সোফিয়ার কিছু সহজ অথচ কার্যকর অভ্যাস আছে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখেন জলপাই তেল, যা শুধু খানই না, কখনো কখনো মুখে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও ব্যবহার করেন। চোখের নিচের কালচে দাগ ও ফোলাভাব কমাতে ব্যবহার করেন পুদিনা পাতা আর সারা দিন নিজেকে সতেজ রাখতে প্রচুর পানি খান।
নিজেকে জোর করে বাইরে নিয়ে যান, অন্তত এক ঘণ্টা হাঁটার জন্য। এই ইতিবাচক জীবনধারাই তাঁর দীর্ঘ, সুস্থ জীবন এবং প্রাণবন্ত ব্যক্তিত্বের পেছনের আরেকটি বড় কারণ।
সূত্র: হ্যালো