সিচুয়েশনশিপে আছেন? এই পাঁচ ভুল করবেন না
সিচুয়েশনশিপ এমন এক সম্পর্ক, যা ঠিক প্রেম নয়, আবার সাদামাটা বন্ধুত্বও নয়। সিচুয়েশনশিপে থাকা দুজন ব্যক্তি বিয়ে বা দায়িত্বশীলতার নির্দিষ্ট গণ্ডিতে নিজেদের আটকাতে চান না। এমন দোলাচলের সম্পর্কে যদি জড়িয়েই পড়েন, কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে। নইলে হয়ে যেতে পারে বড়সড় ভুল। তাতে বাড়ে কষ্ট। এ সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক। তাঁর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন রাফিয়া আলম।
প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্কের বাইরে সিচুয়েশনশিপের ভাবনাটা অনেকের কাছেই অচেনা। তবে পরিস্থিতির কারণে এমন সম্পর্কে মানুষ জড়িয়ে পড়তেই পারে। এভাবে কাছাকাছি আসতে গিয়ে বাড়তে পারে ভালো লাগা। কেউ কেউ এই সিচুয়েশনশিপ থেকেই একটা পোক্ত সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে চাইতে পারেন। অপরপক্ষ তা না চাইলে তখন বাধে বিপত্তি। সিচুয়েশনশিপের পাঁচটি ভুল এবং এর সমাধান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১. প্রত্যাশা গড়ে তোলা
একসঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে একে অন্যের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়। তবে নির্ভর করতে পারার মতো একজন সঙ্গীকে প্রত্যাশা করা কিন্তু সিচুয়েশনশিপের জন্য মারাত্মক এক ভুল। বরং আপনাকে মেনে নিতে হবে, আপনার এই সঙ্গী সত্যিকার অর্থে কখনোই আপনার যত্ন নেবেন না। সত্যিকার সঙ্গী হিসেবে আপনি সুখে-দুঃখে তাঁকে পাশে পাবেন না।
২. আচরণে ভালোবাসা খোঁজা
ধরা যাক, সিচুয়েশনশিপে থাকা দুজন ব্যক্তির মধ্যে একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যজনকে ভালোবাসার ইমো পাঠাচ্ছেন। কিংবা আবেগজড়ানো বার্তা পাঠাচ্ছেন। অথবা বাস্তবেই হয়তো অন্যজনের প্রতি যত্নশীল আচরণ করছেন। একসঙ্গে সময় কাটানোর ফলে এমন আচরণ অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এর মানেই যে ভালোবাসা, তা ধরে নেওয়া ভুল।
৩. কারও সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া
যখন আপনি সিচুয়েশনশিপে আছেন, তখন আপনার এই সঙ্গীকে বিশেষ বন্ধু হিসেবে কারও সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ভুল। আমাদের দেশের সামাজিক পরিসরে এ ধরনের সম্পর্কের ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। পরবর্তী সময়ে যখন এই সম্পর্ক কোনো পরিণতি পাবে না, তখন আপনি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন।
৪. ভালো থাকার ভান করা
আপনি যদি সিচুয়েশনশিপে ভালো না থাকেন, সময়টা উপভোগ না করেন, তাহলে ভালো থাকার ভান করবেন না। এটা কোনো প্রেমের সম্পর্ক নয় যে কিছুটা সময় দিলে সব ঠিক হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। তাই ভালো না লাগলে এখানে সময় ব্যয় করা ভুল। বরং আপনি ভালো না থাকলে খোলাখুলিভাবেই বলুন অপর পক্ষকে।
৫. পরিণতির জন্য জবরদস্তি
সিচুয়েশনশিপ থেকেও সত্যিকার ভালো লাগা তৈরি হতে পারে। তাতে দোষের কিছু নেই। তবে পরিণতির দিকে এগোনোর জন্য অপরজনের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা কিংবা ভালোবাসার দাবি করা ভুল। তিনি আপনাকে ভালো না-ই বাসতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনারা এ পথে হাঁটতে শুরু করেননি।
সমাধান জানা থাক
সুন্দর একটা প্রেমময় সংসারের প্রত্যাশা করা মানবমনের খুব স্বাভাবিক এক বৈশিষ্ট্য। তাই সিচুয়েশনশিপে সুখ খুঁজে না পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। নির্দিষ্ট কোনো পরিস্থিতিতে একটা দায়হীন সম্পর্কে ঢোকার চেয়ে বরং সময় নিয়ে খুঁজুন আপনার ভালোবাসাকে।
প্রেম সত্য। প্রেম পবিত্র। প্রেমেই মেলে সুখ। আপনার মনের মতো সঙ্গীর সঙ্গে প্রেমের বন্ধনেই থাকুন। সিচুয়েশনশিপ আপনাকে সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে কেবল। জীবনের পথে সব সময় পাশে পাবেন, এমন মানুষ বরং খুঁজে বের করুন। অনাকাঙ্ক্ষিত বহু সমস্যা থেকে বেঁচে যাবেন।