ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর রেশটা এখনো কাটেনি। সেই সিরিজের নায়কদের একজন মেহেদী হাসান মিরাজ। আজ ঢাকার উত্তরায় একটি পণ্যের দূতিয়ালি করতে যাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজকে পেয়ে সংবাদকর্মীরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ধবলধোলাইয়ের গল্প জানতে চাইলেন। মিরাজও সানন্দে যা শুনিয়েছেন।
টি–টোয়েন্টিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দলের বিপক্ষে এমন সাফল্যের পেছনের কারণটা জানতে চাওয়া হয় মিরাজের কাছে। মিরাজ অবশ্য জানা কথাটাই বলেছেন, ‘আমরা রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা করিনি। আমরা চেষ্টা করেছি প্রক্রিয়াটা ধরে রাখার। রেজাল্টটা দিন শেষে আসবে। আমরা মাঠে ওইভাবেই চেষ্টা করেছি, ব্যাটসম্যানরা যেন রান করতে পারি, বোলাররা যেন ভালো বল করতে পারি এবং ফিল্ডারদের যেন সমর্থন দিতে পারি। সব মিলিয়ে টিম কম্বিনেশন ভালো ছিল এবং সবাই ভালো ক্রিকেট খেলেছে বলেই জিতেছি।’
ঘরের মাঠে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স গর্ব করার মতোই। টি-টোয়েন্টিতেও এর আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে তা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ উইকেটে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সাফল্য তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন সূর্যোদয়ের মতোই।
মিরাজও বললেন সেই তাৎপর্যের কথা, ‘আমরা অনেক দিন ধরে ওয়ানডে ভালো খেলছি। সবাই কিন্তু বলে যে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল না, টেস্টে ভালো করতে পারি না। আমার মনে হয়, টি-টোয়েন্টিতে এটা দিয়ে শুরু হলো আমাদের, সিরিজ জিতেছি ও ধবলধোলাই করেছি।’
সেই সাফল্যও এনে দিয়েছে নতুন চেহারার এক টি-টোয়েন্টি দল। এই পরিবর্তনের কথাও মিরাজের মুখে, ‘দলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় এসেছে, যারা অনেক সাহসী ও মেধাবী। এই প্রতিভা যদি মাঠে কাজে লাগাতে পারে, তাহলে ভালো করবে। আমার মনে হয়, সবাই সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। সবাই যেভাবে পরিশ্রম করছে, এটা আমাদের দলকে অনেক ওপরে নিয়ে যাবে ও অনুপ্রাণিত করবে।’
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম সুযোগ পেয়েই ৪ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ, অবদান রেখেছেন ব্যাট হাতেও। তৃতীয় ম্যাচে উইকেট না পেলেও দারুণ একটা রানআউট করেছেন। বাটলারের ওই রানআউটটা বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশের জয়ে।
অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিব আল হাসানের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে মোটামুটি প্রতিষ্ঠিতই করে ফেলেছেন নিজেকে। সাকিবের উচ্চতায় কি যেতে পারবেন একজন?
মিরাজ দারুণ উত্তর দিলেন, ‘বিশ্বাস না করলে তো (বেশি দূর) যেতে পারব না। অবশ্যই বিশ্বাস করি। দলে যত বেশি অলরাউন্ডার থাকে, দলের অবস্থা তত ভালো থাকে। কম্বিনেশন করতে ভালো হয়। সাকিব ভাই তো বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডার। তাকে দেখেই আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। যখন চোখের সামনেই বিশ্বসেরা খেলোয়াড় দেখছি, তখন অবশ্যই আমাদেরও লক্ষ্য থাকে যেন আমরাও একদিন এমন হতে পারি।’
সাকিবের মতো এখন নিয়মিত তিন সংস্করণে খেলছেন মিরাজ। মাঝে অনেকটা সময় তিনি ২০ ওভারের বিবেচনায় ছিলেন না। যে কারণে ৩৭টি টেস্ট ও ৭০টি ওয়ানডে খেলে ফেললেও টি–টোয়েন্টি খেলেছেন মাত্র ২১টি। প্রায় চার বছর বাইরে থাকার পর গত বছর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ দিয়ে ফিরেছেন টি-টোয়েন্টিতে।
তখন থেকে মিরাজের একটাই ভাবনা, দলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়া, ‘টি-টোয়েন্টি দলে আমি অনেক বছর পর ফিরেছি। এখানে আপনি প্রতিদিন পারফর্ম করতে পারবেন না। ছোট ছোট অবদানও টি-টোয়েন্টিতে দলের জন্য অনেক বড় হয়ে যায়। আমি ওইভাবেই চেষ্টা করি যেন দলকে সহায়তা করতে পারি।’