টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের যে সমস্যা দেখেন মোসাদ্দেক

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোসাদ্দেকটুইটার

ম্যাচের গতিপথ বদলে গেছে নাসুম আহমেদের করা ১৫তম ওভারেই। ম্যাচ শেষে ৩৪ রানের ওই ওভারের কথা আলাদা করেই বলেছেন দুই অধিনায়ক। তবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্সের পেছনে এ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা মোসাদ্দেক হোসেন খুঁজে পাচ্ছেন আরেকটি কারণও। বলছেন, মাঝের ওভারগুলোতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে বাংলাদেশ। সেটি বোলিংয়ে যেমন, তেমনি ব্যাটিংয়েও।  

সিরিজের তিন ম্যাচেই বাংলাদেশ আগে বোলিং করেছে। প্রথম ম্যাচে পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট নেওয়ার পর শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজার সঙ্গে ওয়েসলি মাধেভেরের দুটি জুটিতে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেদিন মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট ধরে রেখে রানের গতি বাড়িয়েছিল জিম্বাবুয়ে। আজ অবশ্য ১৩তম ওভারের মধ্যেই জিম্বাবুয়ে হারিয়েছিল ৬ উইকেট। তবে রায়ান বার্ল ও লুক জঙ্গুয়ের জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। এরপরই এসেছে নাসুমের ওই ওভার।

আরও পড়ুন

ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল ভালোই। লিটন দাস মাত্র ১৩ রান করলেও বল নষ্ট করেননি। ২০০–এর বেশি স্ট্রাইক রেট তাঁর। কিন্তু আফিফ ছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ রান আর বলের হিসাব মেলাতে পারেননি। টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর মাঝের ব্যাটসম্যানদের ওপর উইকেট হারানো ও রানরেটের ঊর্ধ্বগামিতার দ্বিমুখী চাপ ছিল। সবাই খেই হারিয়ে ফেলেছেন তাতেই।

ফিফ ছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ রান আর বলের হিসাব মেলাতে পারেননি। টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর মাঝের ব্যাটসম্যানদের ওপর উইকেট হারানো ও রানরেটের ঊর্ধ্বগামিতার দ্বিমুখী চাপ ছিল
এএফপি

ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক বলছেন এসব সমস্যার কথাই, ‘আমরা ম্যাচটা থেকে সরে যাচ্ছি মাঝের ওভারে। যদি বোলিংয়ে দেখেন, তাহলে মাঝের ওভারে আমরা উইকেট বের করতে পারছি না। ব্যাটিংয়েও একই ঘটনা। মাঝের ওভারে খেলাটা যেভাবে তৈরি করা দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। যে কারণে শেষের দিকে আমরা চাপে পড়ছি।’

আরও পড়ুন

ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনার অভাব আছে, সেটিও স্বীকার করেছেন মোসাদ্দেক, ‘টি-টোয়েন্টিতে যদি আপনি খুব দ্রুত উইকেট হারাতে থাকেন, তাহলে রান তাড়া করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। এখানে অবশ্যই হিসাব করে খেলাটা খেলতে হবে। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে সেটা আমরা পারিনি, যে কারণে ম্যাচ হেরেছি।’

বিশ্বকাপের পর এ নিয়ে টানা চারটি সিরিজ জিততে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ (৩টি হার, একটি ড্র)। এ সিরিজে বাংলাদেশ নেমেছিল নতুনদের ‘জয়গান’ গেয়েই। এমনকি সিরিজের আগে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলেছিলেন, ৩-০ ব্যবধানে হারলেও সমস্যা নেই তাঁদের। তবে হারের ধরন অবশ্য বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্যের পাশে আবারও বসিয়ে দিয়েছে প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

আরও পড়ুন

তবে মোসাদ্দেক দাবি করছেন, সর্বশেষ ম্যাচ বাদ দিয়ে সব কিছু নাকি চলেছে তাঁদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই। সামনে আরও ভালো কিছু করার আশাও করছেন তিনি, ‘আপনি দেখেন, এখানে আসার আগে যেমন পরিকল্পনা করেছি—কত রান করতে চাই। এ ম্যাচ বাদ দিলে পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব হচ্ছিল। টি-টোয়েন্টিতে সামনে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ আছে; সাকিব ভাই আসবেন, আরও প্লেয়ার আসবে। ইনশা আল্লাহ আমরা ভালো করব।’

রায়ান বার্লের ঝোড়ো ইনিংসে বদলে গেছে গতিপথ
টুইটার

এর আগে অবশ্য আছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওয়ানডে সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর ওয়ানডে সিরিজের আগে যেমন আশার কথা শোনা গিয়েছিল, মোসাদ্দেকও কথা বললেন সে সুরেই, ‘সবাই জানে, আমরা ওয়ানডেতে কতটা ভালো। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ৩-০–তে জিতেছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী।’

আরও পড়ুন