ব্রাজিল-ইউনাইটেডের মতো লজ্জার হারে চালু হবে ‘ক্ষমা নীতি’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৭–০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লিভারপুলছবি: ইনস্টাগ্রাম

২০১৪ বিশ্বকাপের ব্রাজিলজার্মানি সেমিফাইনালে নব্বই মিনিটের পর যোগ করা সময় ছিল ২ মিনিট। আর গত সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে লিভারপুল–ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ম্যাচে যোগ করা সময় দেওয়া হয় ৩ মিনিট।

৯ বছর আগে–পরের দুটি ভিন্ন প্রতিযোগিতার ম্যাচের যোগ করা সময় উল্লেখ করার কারণ স্কোরলাইন। বিশ্বকাপের ম্যাচটিতে ব্রাজিল হেরেছিল ৭–১ গোলে, প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ইউনাইটেড হেরেছে ৭–০ ব্যবধানে

আরও পড়ুন

দুই দলের গোল ব্যবধান এ রকম বড় হলে ভবিষ্যতে ম্যাচের যোগ করা সময় বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে ইঙ্গিত দিয়েছে ফিফা। সে ক্ষেত্রে নব্বই মিনিটের খেলায় একের পর এক গোলে বিধ্বস্ত হওয়া দলটি ‘ক্ষমা নীতি’র আওতায় পড়বে। উত্তর আমেরিকার বয়সভিত্তিক বেসবল, সফটবলে ‘মার্সি রুল’র প্রচলন আছে। তবে এখন পর্যন্ত সিনিয়র পর্যায়ের পেশাদার ফুটবলে এ ধরনের আইন নেই।

জার্মানির কাছে ৭–১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল ব্রাজিল
ফাইল ছবি

ফুটবলের আইনপ্রণয়নের দায়িত্বে থাকা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি) বৃহস্পতিবার ফুটবল ম্যাচে ‘কার্যকর সময়’ নিয়ে একটি কনফারেন্সের আয়োজন করে। ফিফার রেফারিং প্রধান পিয়েরলুইজি কলিনা সেখানে ভবিষ্যতে আইন বদলানোর ইঙ্গিত দেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা এমন একটা নিয়ম দেখতে পারি, যেখানে দুই দলের মধ্যে ব্যবধান অনেক বড় হয়ে গেলে যোগ করা সময় দেওয়া হবে না। সেটা হবে আইনের মাধ্যমেই।’

আরও পড়ুন

তবে এ ধরনের কোনো নিয়ম চালুর আগপর্যন্ত নষ্ট হওয়া সময় সঠিকভাবে পুষিয়ে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন কলিনার। প্রিমিয়ার লিগের গত সপ্তাহের দুটি ম্যাচের প্রসঙ্গ টেনে এই ইতালিয়ান বলেন, ‘গত সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগের ১০ ম্যাচের চারটিতে ১০০ বা এর বেশি মিনিট খেলা হয়েছে। এর বাইরে আরও দুটি ম্যাচে সময় বাড়তে পারত। একটাতে স্কোর ছিল ৭–০ (লিভারপুল–ইউনাইটেড), আরেকটিতে ৪–০ (ব্রাইটন–ওয়েস্ট হাম)। লিভারপুলের ম্যাচটিতে দ্বিতীয়ার্ধে তিন মিনিট যোগ করা হয়েছিল। অথচ ওই অর্ধে গোল হয়েছিল ৬টি।’

আরও পড়ুন

ইউনাইটেডকে ৭–০ গোলে হারানোর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৫–২ গোলে হেরেছিল লিভারপুল। সেই ম্যাচে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছিল ৭ মিনিট। তবে নব্বই মিনিটের মধ্যে নষ্ট হওয়া সময় বিবেচনায় নিলে যোগ করা সময় ১৬ মিনিট হয় বলে জানিয়েছেন কলিনা।

২০০২ বিশ্বকাপের ফাইনাল পরিচালনা করা ইতালিয়ান এই রেফারি বলেন, যোগ করা সময় কমিয়ে বা বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে ম্যাচ তো বটেই শিরোপার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা থাকে বলে ‘কার্যকর সময়’ ব্যবস্থাপনা জরুরি, ‘এখন রেফারিরা নষ্ট সময় হিসাব করতে নিজেদের কমনসেন্স ব্যবহার করেন। কিন্তু কেউ যখন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, তখনই কমনসেন্সের ব্যাপার আসে। হ্যাঁ, ৭ গোলের ব্যবধান হয়ে গেলে সঠিক সময় নিরূপণ করাটা কঠিন। কিন্তু একটি প্রতিযোগিতার নিয়মে যখন গোল ব্যবধানের পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া হয়, তখন এক গোল করা বা না করাও বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।’

আইএফএবি সময় নষ্টের মাধ্যম হিসাবে পাঁচটি ‘মুহূর্ত’কে চিহ্নিত করেছে। এগুলো হচ্ছে খেলোয়াড় অদলবদল, খেলোয়াড়দের চোট, পেনাল্টি/লাল কার্ড, ভিএআর এবং গোল উদ্‌যাপন। এসব ঘটনা যোগ করা সময় গণনায় বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে মত ফুটবলের আইনপ্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠানটির।